মোল্লাহাটে সংবাদ প্রকাশের পর ভূমি সেবায় প্রতারনা রোধে প্রশাসনের উদ্যোগ
মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : “মোল্লাহাটে টাকা হলেই জমির মিউটেশন দেন ডাঃ হৃদয় কুমার” শিরোনামে দৈনিক দেশ সংযোগ পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতারনা রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম উক্ত ডাঃ হৃদয় কুমারকে ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া সহ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক/গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ভূমির সকল সেবা অনলাইন/ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। এতে কোন প্রকার হয়রানি বা দূর্নীতির সুযোগ নেই। সাধারণ গ্রাহকরা নিজে বা যে কারো সাহায্যে অনলাইনে ভূমি সেবা যেমন, জমির পর্চা ও মিউটেশন সহ সকল কার্যক্রম অফিসে না গিয়ে সম্পন্ন করতে পারেন। এ সুযোগে কিছু কিছু ভুইফোঁড় দোকানদার গ্রাহকদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছে। এবিষয়ে মোল্লাহাট উপজেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম। এছাড়া সাধারণ ভূমি মালিক/সেবা গ্রহিতাগণ যেন, দালালদের খপ্পরে না পড়ে হয়রানি মুক্ত সঠিক সেবা গ্রহণে সচেতন হয় সেই আহ্বানও জানান তিনি।
এবিষয়ে উদয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম সাইকুল আলম জানান, তিনি খোজ খবর নিয়ে জানতে পারছেন যে, হৃদয় কুমার ডাক্তারি চেম্বার খুলে ভূমি মালিকদের থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন, এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকের টাকা ফেরৎ দেয়া সহ বিভিন্ন জনের কাছে ধর্না দিচ্ছে। এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
ডাঃ হৃদয় কুমার চৌধুরী ওরফে ডাঃ হৃদয় ওরফে থেরাপি ডাঃ হৃদয় বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাব মোল্লাহাটের কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের বলেন, আমি এতো দিন জানতাম না যে, এভাবে অতিরিক্ত টাকা নেয়া যাবে না। আপনারা সংবাদ প্রচার করায় ইউএনও স্যার আমাকে ডেকে ভূমি বিষয়ক কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হেলেনা বেগম নামের মহিলার থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে তার কাগজপত্র তোলা সহ মিউটেশনের আবেদন করা/দায়িত্ব নেয়া ভুল হয়েছিল, যার কারণে আজ আমি জবাব জবাবদিহিতার স্বীকার হয়েছি। আমি এতদিন অনেকের কাজ করেছি কোন সমস্যা হয় নাই। এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ক্ষমা করে দেন, আমি এধরনের কাজ আর করবো না।
উল্লেখ্য, গত ৩০ তারিখে দৈনিক দেশ সংযোগ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, বাগেরহাটের মোল্লাহাটে টাকা হলেই জমির মিউটেশন বা ভূমি অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে দেন হৃদয় কুমার চৌধুরী ওরফে ডাঃ হৃদয় ওরফে থেরাপি ডাঃ হৃদয়। ভূমি মালিকের কোন প্রকার ভূমি অফিসে যাওয়া বা যোগাযোগের প্রয়োজনও না কি হয়না ? কাজ বা সমাস্যা ছোট-বড় অনুযায়ী সর্বনিম্ন ১০ থেকে ৩৫ হাজার বা ততোধিক টাকার বিনিময়ে সব করেন তিনি। চুক্তি অনুযায়ী কাজ না হলে সামান্য কিছু কর্তন করে টাকা ফেরৎ দেয়ার নজিরও আছে তার। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সাথে তার না কি রয়েছে সম্পর্ক ? উপজেলার বারুইগাতী গ্রামের মৃত বিলাস কুমার চৌধুরীর ছেলে হৃদয় কুমার চৌধুরী সম্পর্কে এমনি তথ্য পাওয়া গেছে। উপজেলা ভূমি অফিস সংলগ্ন মোল্লাহাট কেআর কলেজের দেয়ালের বিপরীতে নিজস্ব চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে এ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন হৃদয় কুমার।