ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে ঘুসবাণিজ্য, উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বদলি

বিশেষ প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগীতে বাল্যবিয়ে বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে উপজেলা পরিষদের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিশির কুমার সরকারের ঘুস বাণিজ্যের ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ওই কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

গত ১১ মে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফয়সাল আহমেদ স্বাক্ষরিত বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংস্থাপন শাখার এক অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ওই কর্মকর্তাকে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আরএম শাখায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। গত ২৬ এপ্রিল ‘বেতাগীতে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে অভিযান, ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে ঘুসবাণিজ্য’ শিরোনামে উপজেলা পরিষদের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিশির কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ১১ মে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বদলি আদেশ কার্যকর হয়।

উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে একটি বাল্যবিয়ে চলাকালীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন। এ সময়ে বর ও কনেপক্ষকে কোনো জরিমানা দিতে হবে না এবং ৫০ হাজার টাকা হলেই ইউএনওকে ম্যানেজ করা যাবে- এমন চুক্তি করেন উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিশির কুমার সরকার।

বর-কনে বিয়ের বৈঠক থেকে পালিয়ে যাওয়ায় বর পক্ষের অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে থানায় নিয়ে আসর পর মুচলেকা লিখে থানার বাথরুমের মধ্যে ১৫ হাজার টাকা ঘুস হিসেবে গ্রহণও করেন শিশির কুমার।

পুরো ঘটনার প্রমাণ প্রতিনিধির হাতে আসার পর বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা প্রশাসনের। পরে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ঘুস লেনদেনের বিষয়ে একটি কল রেকর্ডও হাতে আসে। এমনকি ওই সময়ে ঘুসের টাকা ফেরৎ না দিয়েই অফিস ত্যাগ করেন ওই কর্মকর্তা শিশির কুমার।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন জানান, উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিশির কুমার সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালীন ঘুসবাণিজ্যের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোয় তার বদলির জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে সুপারিশ করা হয়। পরে তাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আরএম শাখায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *