শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় এই সেই তারাফুলি?
মোঃ আরিফুর রহমান, শেরপুর, ময়মনসিংহ : শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় নামা কইয়াকুড়ি পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা তারাফুলি, স্বামী আবুল কালাম একজন গরীব কৃষক। আজ থেকে ১০-১২ বছর আগেও যাঁরা দুবেলা দুমুঠো ভাত জুটাতে দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে, সেই তারাফুলি রাতারাতি হয়ে গেল কোটি টাকার মালিক। নেপথ্যে এমনকি রয়েছে, সে নাকি তোয়াক্কা করেনা সমাজের কাউকে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে তিনি এলাকার কিছু যুবকদের লালন করে আসছে, তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে নানাভাবে হেনস্থার স্বীকার হচ্ছে। এমনকি কেইস মামলার ভয় দেখানো হয় এলাকাবাসীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (ভূক্তভোগী) একজন জানান, তারাফুলি সমাজের অন্তরালে চড়া লাভে সুদের কারবারী করে আসছে, যার হাত থেকে কেউ রেহাই পাইনি। এক ভূক্তভোগী জানান গত ২০১৮ সালের মার্চ মাসে তারাফুলির কাছ থেকে অটোরিকশা কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা সাদা স্ট্রাম্পের ওপর সই করে নিয়েছিলাম, যা পরবর্তীতে সেই টাকার উপর ৬২ হাজার টাকা লাভ দেবার পর যখন আসল ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেবার জন্য তার কাছে যাই তারাফুলি তখন আমার কাছে আরও ১লাখ ২৫ হাজার টাকা বাকী রয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করে, বিষয়টি জানাজানি হলে আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি এমনকি সই করা স্ট্যাম্প এর মাধ্যমে মামলা করার হুমকি দিয়ে আসছিলো। কোন উপায় না দেখে নিজের বসতভিটা বিক্রি করে তারাফুলির মিথ্যা টাকা পরিশোধ করি। বর্তমানে আামি বসতভিটা ছেড়ে ঢাকায় ফুটপাতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। তারাফুলির কাছে জিম্মি হয়ে আছে এলাকার শত শত মানুষ। সে ইতিমধ্যেই ৫-৭একর জমির মালিক এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে দামি দামি বেশ কয়েকটি জমির মালিক। সরকারের আইনকে তোয়াক্কা না করে নামমাত্র সুদের প্রলোভন দেখিয়ে সাদা স্টাম্পের উপর সই রেখে টাকা দিয়ে থাকেন, পরে নিজের ইচ্ছে মতো টাকার অংক বসিয়ে শুরু করেন অমানষিক নির্যাতন। তার নির্যাতনের শিকার হয়ে ২৫-৩০জন লোক বসত বাড়ি হারিয়ে আজ নিঃস্ব। লোক লজ্জার ভয়ে মানুষ কথা বলতে পারছেনা, এমনকি নারী সংক্রান্ত বিষয়েও হুমকি দিয়ে থাকেন।ন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক ব্যক্তি অপরাধ তথ্যচিত্র কে বলেন, যে তারাফুলি চড়া মাত্রার সুদের ব্যবসার অন্তরালে মাদক ব্যবসা করে থাকেন। জানা যায় সে ৭০-৮০ লাখ টাকা এই সুদের কারবারীতে লাগানো আছে। এলাকার মানুষের দাবি বিষয়টি সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জোরালো হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো একান্তই প্রয়োজন বলে দাবি এলাকাবাসীর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার যখন বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা তথা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের উন্নয়নের জন্য নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, তখন আমার দেশের কিছু অসাধু লোক সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তথা তার পরিবারের উপর জুলুম, অত্যাচার এমনকি মিথ্যা মামলা সহ নানাভাবে হেয়পতিপন্ন করে আসছে। যা সরকারের বিরুদ্ধাচরণের শামিল। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনে জোড়ালো ভূমিকা একান্ত প্রয়োজন বলে দাবি এলাকাবাসীর।
সেরকম একটি নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের পরিবার।
জানাগেছে সম্প্রতি ২৪/০৪/২০২৩ তারিখ সময় আনুমানিক ৩.৩০ ঘটিকা তারাফুলি ও তার পালিত গোন্ডাবাহিনীরে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের বাড়ি ঘরে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নির্যাতন চালায়।
এ ব্যাপারে মোঃ আছাদুজ্জামান পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন, গ্রাম পাঁচ কাহুনিয়া, উপজেলা নকলা, জেলা শেরপুর, বাদি হয়ে ২৪-০৪-২০২৩ ইং তারিখে নকলা থানার একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে আছাদুজ্জামানের বিশেষ টাকার প্রয়োজনে হলে তারাফুলির কাছ থেকে হাওলাত স্বরূপ তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করার মর্মে স্ট্যাম্প এ সই করে ২,৩০, ০০০ (দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা গ্রহণ করে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা পরিশোধ করে। সম্পুর্ন টাকা পরিশোধের পর যখন সইকৃত স্ট্যাম্প ফেরত চাইতে গেলে আরও এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা বাকী রয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করে এবং টাকা না দিলে রাস্তা ঘাটে অপমান অপদস্থ এমনকি খুন সহ নানা মিথ্যা মামলা করার হুমকিও দিয়ে আসছে, শুধু তাই নয় মাঝে মাঝে বাড়ি ঘরে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যাচ্ছে। বিষয়টি জানাজানি হলে আরও ২৫-৩০ জন লোক তারাফুলির স্ট্যাম্প এর প্রতারণায় এখনো তারা তার ধারে ধারে ঘুরছে, এবং তারা নি:স্ব প্রায়। স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে জানা গেছে তারাফুলি আরও ৫০-৬০ জন লোকের স্ট্যাম্প জিম্মি করে বিভিন্ন সময়ে তাদের উপর বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন সহ আরও মোটা অংকের টাকা দাবি করে থাকে। লোক লজ্জার ভয়ে সাধারন মানুষ মুখ খুলছে না। সমাজের অন্তরালে তারাফুলির মতো মাদক ব্যবসা, সুদের কারবারিদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আমাদের সমাজকে আলোকিত সমাজ হিসাবে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মাট বাংলাদেশ) গড়ার দায়িত্ব নিতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবি এলাকাবাসীর। (আগামীতে আরো বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে)