নির্বাচন না করতে দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়ে লাভ নেই : বিএনপিকে ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নির্বাচন করতে দেবেন না- এ দুঃসাহস দেখিয়ে লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী এই দেশে যথাসময় নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যারা ব্যর্থ, তারা সন্ত্রাস করবে। নির্বাচন করতে দেবে না- সেই দুঃসাহস দেখিয়ে লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন হবে।’
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে এ কথা বলেন।
রংপুর বিভাগ ও এর অন্তর্গত আওয়ামী লীগের সকল সাংগঠনিক ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় সভা, সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের আনুুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং পরবর্তীতে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও এর আন্তর্গত সাংগঠনিক ইউনিট সমূহের নেতৃবৃন্দের সাথে এই বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি সন্ত্রাস করবে- এমন শঙ্কা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা নির্বাচন বানচালের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। ফখরুল ইসলাম বলেন- ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রেও বিশ্বাস করে না।’ তো তা কোন গণতন্ত্র? জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোট? আমরা মাগুরা মার্কা উপনির্বাচন বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, বিএনপি দেশটাকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। তারা দেশকে কী মেরামত করবে, সবকিছুতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন শেখ হাসিনা করছেন। আপনাদের (বিএনপি) একটা উন্নয়নের কাজ নেই, যেটা দেখিয়ে ভেটারদের বলবেন, ভোট দেন।
তিনি বলেন, এ দেশে যারা আন্দোলনে জিতে তারাই নির্বাচনে জিতে। গণঅভ্যুত্থান ও নানা আন্দোলনের চেষ্টা করে শুরুতেই তারা হোঁচট খেয়ে যায়, বাস্তবে মানুষ কোনো আন্দোলন দেখতে পারেনি। নেতাকর্মীরা (বিএনপির) জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি, একটাও হালে পানি পায়নি। বিএনপি ব্যর্থ গণআন্দোলন নিয়ে পথহারা পথিকের মতো।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, ওয়াশিংটন গেছেন নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য। মানুষের কষ্ট লাঘবে, বিশ্ব সংকটে ঘুরে দাড়াতে সাহায্য নেয়া হচ্ছে। বিএনপির মতো দেশ বিক্রি করে সাহায্য নিচ্ছি না- অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে উপর ভিত্তি করে নিচ্ছি, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নির্বাচন গণতান্ত্রিক উপায়ে হবে, অন্য দেশের পরামর্শে হবে না। অন্য দেশের নির্বাচনে আমাদের হস্তক্ষেপ নেই, তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কেন অন্য দেশের মাথাব্যথা থাকবে?
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করবে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিমাগারে। বিএনপির মাথায় এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত। কোন লাভ হবে না, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর এদেশে ফিরবে না।
‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাস করে না ’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোন গণতন্ত্র চান? জিয়া-খালেদা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বিএনপির গণতন্ত্র আমরা বিশ্বাস করি না। বিএনপি তো নিজেই এ দেশকে ধ্বংস করে গেছে আর শেখ হাসিনা দেশে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ভোট পাওয়ার জন্য বিএনপির একটাও দৃশ্যমান সফলতা নেই। মিথ্যাচার করে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। বিএনপি এ দেশের সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক। দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ অবিচল।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়নের মধ্যদিয়ে বৃহত্তর রংপুর বিভাগে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।