(২০ দিনেও নেই কোন পদক্ষেপ) সান্তাহারে অবৈধভাবে চলছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘিতে ছাড়পত্র বিহীন অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা। গত ৩০ মার্চ একাধিক শিরোনামে ওই কারখানার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের ২০ দিন পরেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি আদমদীঘি উপজেলা প্রশাসন ও বগুড়া পরিবেশ অধিদপ্তর। যার ফলে আজও চলছে কারখানাটি।
ওই এলাকার বাসিন্দা আবু মুসা বলেন, উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের হবির মোড় নামক স্থানে আনিকা পেট্রোল পাম্পের দক্ষিনে আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত জি এস প্লাষ্টিক ফ্যাক্টারী। সেখানে পলিথিন রিসাইক্লিনের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী পণ্য তৈরি করা হয়। রিসাইক্লিনের জন্য রোদে শুকাতে দেওয়া হচ্ছে পলিথিনগুলো। ওই পলিথিনগুলো বেশ কিছু শ্রমিক মুখে মাস্ক ব্যবহার না করেই ময়লা আবর্জনা থেকে বাছাই করছেন। এতে করে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছে শ্রমিকরা। এছাড়াও সামান্য বাতাস হলেই এসব পলিথিনের টুকরো গুলো উড়ে যাচ্ছে পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়কে। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এলাকা।
সরেজমিনে গত বুধবার দুপুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সান্তাহার পৌর শহরের লকো পশ্চিম কলোনীর সোলায়মান সরদারের চাতাল ভাড়া নিয়ে গোপীনাথ সরকার নামে এক ব্যবসায়ী তার স্ত্রী উজ্জলা রাণী সরকারের নামে গড়ে তুলেছেন ওই ফ্যাক্টারী। ফ্যাক্টারী পরিচালনা করার জন্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তর ও উৎপাদন বিপণন কোন ছাড়পত্র। শুধু পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি ছাড়পত্র নিয়েছেন তিনি। তাছাড়া কারখানা মালিক সম্পদশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পায় না। এ কারনে তিনি পেশি শক্তির বলে অবৈধ ভাবে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন ছাত্র পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নেহাল আহম্মেদ প্রান্ত বলেন, সরকারি বিধি নিষেধ না মেনেই গড়ে উঠা কারখানাটিতে প্লাষ্টিক ও পলিথিন বাজারজাত হওয়ায় সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। তাই জনস্বার্থে অবৈধ কারখানাটি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।
দমদমা গ্রামের বাসিন্দা মানিক হোসেন বলেন, গোপীনাথের দোকান থেকে বেশ কিছু দিন আগে পুকুর শুখানোর জন্য পলিথিন পাইপ নেই। দুই দিন চলার পর পাইপটি ফেটে যায়। পরে জানতে পারলাম তার নিজস্ব কারখানায় তৈরি। এই পাইপের গুণগত মান খুব খারাপ। এতে করে প্রতিনিয়ত পাইপটি কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার জানান, সংবাদ প্রকাশের পর ওই কারখানার মালিক এসেছিলেন। তিনি পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য অবেদন করেছেন তবে এখনো পায়নি। তাছাড়া উৎপাদন বিপণন কোন কাগজপত্র নেই। আর পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসের সব ঠিক আছে দেখলাম। এখানে আমি কি করতে পারি। এটা পরিবেশ ও বিএসটিআই দায়িত্ব। এরপরেও পরিবেশ অধিদপ্তের সঙ্গে আমি কথা বলবো।
এ বিষয়ে বগুড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ মুঠোফোনে জানান, সংবাদ প্রকাশের পর এক শিক্ষক মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। ঈদের পর কারখানাটি পরির্দশন করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।