মেহেরপুরে দুইভাইকে হত্যার দয়ে ৯ জনের মৃত্যুদন্ড
ডেস্ক রিপোর্ট : জেলার গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের সহোদর রফিকুল ইসলাম ও আবুজেল হোসেন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশসহ প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদ- দিয়েছে আদালত, অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলো- মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে আব্দুল হালিম,একই গ্রামের আসের হালসানার ছেলে আতিয়ার রহমান, আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দিন, নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, দবির উদ্দিনের ছেলে শরিফ হোসেন, নবীর উদ্দিনের ছেলে দবির উদ্দিন, আফেল উদ্দিন ওরফে আফেল সরদারের ছেলে আজিজুল হক, দাবির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ হোসেন এবং মুনসুর আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম মনি। দ-িতদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক জানান- ২০১২ সালের ৫ জুন গাংনীর কাজিপুর এলাকায় চোরাচালানীদের ফেন্সিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। চোরাচালানীরভ চোরাচালান ধরিয়ে দেবার সাথে সম্পৃক্ততা আছে সন্দেহ করে কিয়ামুদ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলামকে (৪০)। তাই ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। ১৬ জুন সকালে ভারত সীমান্তের ১৪৫ নং/এস-৬ নং সীমানা পিলারের কাছ থেকে বাংলাদেশ অংশে ৭০-৭৫ গজ দক্ষিণে কাজিপুরের লালটুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুইভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার হয়।
পরে দুই সহোদর হত্যার ঘটনায় নিহতের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে দঃবিঃ ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১, জি আর কেস নং ৪৩৩/১২, দায়রা নং ১১/২০১৫। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যে আসামীরা দোষী প্রমানীত হওয়ায় আদালত মামলার আদেশ প্রদান করেন।
মামলার অপর আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে এড. আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম এবং কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।
কাজী শহিদুল হক জানান- চাঞ্চল্যকর দুইভাই হত্যার মামলার রায় ঘোষণার আগে আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বেলা ১১ টার পর বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এজলাসে প্রবেশ করেন। এরপর কয়েকটি মামলার শুনানি শেষ করে চাঞ্চলকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মেহেরপুরের ইতিহাসে এই প্রথম একসাথে নয়জনের ফঁসির আদেশ হলো বলে তিনি জানান।
মামলার বাদি জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন- এমন আদেশ শোনার অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি অবিলম্বে এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।
আসামীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল আলম জানান- এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।