ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে প্লাস্টিক ও পলিথিন উৎপাদন কারখানা
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে পরিবেশের কোনো প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা। সান্তাহার পৌর শহরের হবির মোড় নামক এলাকায় গড়ে উঠা এই কারখানাটি শিশু-কিশোর শ্রমিক দিয়ে চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে পৌর শহরের হবির মোড় এলাকায় একটি পেট্রোল পাম্পের দক্ষিনে সড়ক ঘেঁষে কারখানাটির সাইনবোর্ড ঝুঁলছে। সেখানে লেখা ছিল ‘জি এস প্লাষ্টিক ফ্যাক্টারী’। ভিতরে কাজ করছেন শ্রমিকেরা। রিসাইক্লিংয়ের জন্য রোদে সুকাতে দেওয়া পলিথিনগুলো কয়েকজন মিলে বাছাই করছেন। সামান্য বাতাস হলেই এসব পলিথিনগুলো উড়ে যাচ্ছে পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও সড়কে। ফলে নষ্ট হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।
এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলনের আদমদীঘি উপজেলা কমিটির সভাপতি গোলাম রব্বানী দুলাল বলেন, সরকারি বিধি নিষেধ না মেনেই গড়ে উঠা কারখানাটিতে প্লাষ্টিক ও পলিথিন বাজারজাত হওয়ায় সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। তাই জনস্বার্থে অবৈধ কারখানাটি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, সম্পতি সান্তাহার পৌর শহরের লকো পশ্চিম কলোনীর সোলায়মান সরদারের চাতাল ভাড়া নিয়ে গোপীনাথ সরকার নামে এক ব্যবসায়ী তার স্ত্রী উজ্জলা রাণী সরকারের নামে শুধু মাত্র পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি ছাড়পত্র নিয়ে অবৈধ ভাবে কারখানাটি চালু করেন। প্রথম দিকে কারখানাটিতে শিশু শ্রমিক ব্যবহার করলেও বর্তমানে কয়েকজন কিশোর এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র থাকলেও কারখানায় কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আদমদীঘি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের ইনচার্জ রুহুল আমীন জানান, ওই প্রতিষ্ঠানকে ফায়ার ল্যাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই সাথে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নেহাল আহম্মেদ বলেন, কারখানার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। নেই কোনো উৎপাদনগত ছাড়পত্রও। কারখানা মালিক সম্পদশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পায় না। এ কারনে তিনি অবৈধ ভাবে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।
কারখানা মালিক গোপীনাথ সরকার বলেন, কারখানা চালুর পর শিশু-কিশোররা কাজ করেছিলো। কিন্তু কিছুদিন পর কাজ থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। কারখানার পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। শিগগিরই সে সব কাগজপত্র হাতে পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টুকটুক তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। তবে ছাড়পত্র ছাড়া কারখানাটি পরিচালনা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।