তানোরে মেয়র সাইদুরের বিলাসীতায় গণ-অসন্তোস

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহীর মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমানকে নিয়ে গণঅসন্তোস ও জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির গুঞ্জন উঠেছে। পৌরসভার উন্নয়ন বঞ্চিত করে মেয়রের কার্যালয়ে রাজকীয় ডেকোরেশন এবং পৌরভবনকে সজ্জিত করায় জনমনে এসব অসন্তোষ ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে নাগরিকগণের রক্ত ঘামের ট্যাক্সের টাকায় মেয়রের এমন বিলাসিতা আসল ঘরে বাতি নাই, ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া’ সেই প্রবাদকে মনে করিয়ে দেয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার প্রায় দু’দশক পেরিয়ে গেলেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া, নিশ্চিত হয়নি নাগরিক সেবা,তবে বেড়েছে করের বোঝা, মেয়রের একতলা বাড়ি হয়েছে চারতলা বিশিষ্ট অট্রালিকা, নিয়েছেন চার চাকার গাড়ী, তার স্ত্রী হয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ আয়করদাতা বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। অনেকে এটাকে মেয়রের ঘোড়া রোগ বলে অবহিত করে বলেন, নাগরিকগণের রক্ত-ঘাঁমের ট্যাক্সের টাকায় মেয়রের এমন বিলাসিতায় গণঅসন্তোসের সুত্রপাত হয়েছে। কেউ বলছে, অক্ষর-জ্ঞানহীন এমন মানুষকে নেতা করলে যা হয়, এটা শিক্ষানগরী মুন্ডুমালার জন্য অত্যন্ত লজ্জার ?
স্থানীয়রা বলছে, পৌরসভার রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস্য মুন্ডুমালা হাটের নেই কোনো উন্নয়ন, সরকারী কোষাগারে বিপুল অঙ্কের টাকা বকেয়া, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়মিত বেতনভাতা হয় না, পয়নিঃস্কাশন-ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই, সড়কবাতি-রাস্তা-ঘাট-সেতু-কালভ্রাটের অবস্থা নাজুক,বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটসহ বিবিধ সমস্যায় জর্জরিত পৌরসভা। অথচ এতো সব সংকটের মাঝে মেয়রের এমন বিলাসিতায় বিস্ময়ে হতবাক পৌরবাসী।
স্থানীয়রা জানান, মেয়র সাইদুর রহমান পেশায় প্রথমে ছিলেন একজন টোকাই, এর পর চুনিয়াপাড়া গ্রামের একটি ধানভাঙ্গানো মিলের ড্রাইভার, পরে মুন্ডুমালা হাটের কুলির সর্দার। এর পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যানের (তৎকালীন) সান্নিধে এসে ভারতীয় কাপড়-চিনি চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। দেলুয়াবাড়ী রাস্তায় কয়েকবার তার চোরাচালান মাল পুলিশের হাতে ধরাও পড়ে এবং তিনি বেশ কিছুদিন কারাভোগও করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, বিএনপির প্রয়াত নেতা শীষ মোহাম্মদদের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েে মুন্ডুমালা মহিলা কলেজে নৈশপ্রহরীর চাকরি বাগিয়ে নেন। বিগত দিনে সাইদুরকে নিয়ে দেশের প্রথম শ্রেণীর একাধিক পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়। কিন্ত্ত বিগত নির্বাচনে বির্তকিত ফলাফলে তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে রাতারাতি তার ভাগ্যর চাকা ঘুরে যায়। হঠাৎ করেই তার ফুঁলেফেঁপে উঠার গল্প আলাদিনের চেরাগকেও হার মানিয়েছে বলে মনে করেন পৌরবাসী। আবার তিনি মেয়র নির্বাচিত হবার পর তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পৌরবাসী একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এসব অপপ্রচার। তিনি বলেন, জনগণের ভালবাসায় তিনি মেয়র হয়েছেন, তিনি শতভাগ সচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *