বাগেরহাটে পানগুছি নদীতে বালু কাটার হিড়িক ফসলী জমি ভাঙ্গনের মুখে
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পঞ্চকরণ ইউনিয়নে পানগুছি নদীর ঘষিয়াখালী মোহনায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করার ফলে প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে যাচ্ছে নদীর তীরবর্তী শত শত বিঘা ফসলী জমি। বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে অনেকেই হয়েছে অভিবাসন। হুমকির মুখে সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচাপাকা রাস্তা। এলাকার জনগুরুত্ব এ সমস্যায় নেই কোন প্রসাশনিক নজরদারী। স্থানীয়দের দাবী জরুরী ভিত্তিতে বালু উত্তোলন বন্ধ করার।
সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডটি নদীর তীরবর্তী পঞ্চকরণ গ্রাম। এখানে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় তিন হাজার, পরিবার রয়েছে দেড় হাজার। ঘষিয়াখালী মোহনার উত্তর প্রান্তে অবস্থিত এ গ্রামের স্বাধীনতা পরবর্তী নদীর তীরের ফসলী এ মাঠে জমি ছিলো প্রায় ৩শ’ বিঘা। একযুগেরও বেশী সময় ধরে নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে দাড়িয়েছে ১’শ বিঘায়। একদিকে নদী ভাঙন অন্যদিকে নদী থেকে প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলন করায় দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলী জমি। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে গোটা গ্রাম। সোনাখালী পঞ্চকরণ ¯øুইজগেট থেকে নতুনবাজার পর্যন্ত চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিও রয়েছে এখন হুমকীর মুখে।
বালু উত্তেলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ফসলী জমির মালিক বৃদ্ধ কৃষক বজলুর রহমান হাওলাদার (৭৪), আলী হাসান হাওলাদার (৬৫), দেলোয়ার দফাদার (৭০),পলাশ হাওলাদার (৪৫), হাসান হাওলাদার (৩৮), আব্দুল মতিন হাওলাদার (৪৯), বেবী বেগম (৬০), মেরিন বিবি (৫০), রিনা বেগম (৩৫), হনুফা বেগম (৫৫) সহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এভাবেই প্রতিদিন ৫/৬টি জাহাজে করে জেলা শহর বাগেরহাট থেকে এসে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। গ্রামবাসীরা এ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করলে তারা কোন কর্ণপাত করছেনা। বলছে সরকারিভাবে ডাক হয়েছে। এ বালু কাটার কারনে আমাদের শত শত বিঘা ফসলী জমি দিন দিন নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তড়িৎ গতিতে উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বালু কাটা বন্ধ না হলে আমাদের এখানে বসবাসের আর কোন পথ থাকবেনা।
এ বিষয়ে পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, নদী তীরবর্তী পঞ্চকরণ ও নতুন বাজার এলাকায় নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ফসলী জমি, বসতভিটা হারাচ্ছে অনেকেই। বিষয়টি এখনই পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তা না হলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুর্খীন হয়ে পড়বে গ্রামবাসী।
এ সর্ম্পকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, পঞ্চকরনে বালু উত্তোলনের বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।