ঠাকুরগাঁও-৩,উপ-নির্বাচন ঘিরে নেতাদের দৌড়ঝাপ
নতুন মুখ চায় ভোটাররা
জসীমউদ্দীন ইতি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ সদ্য শুন্য হওয়া ঠাকুরগাঁও-৩(পীরগঞ্জ-রাণীশংকৈল) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামীলীগ,জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কাস পার্টি সহ বিভিন্ন দলের নেতারা শুরু করেছেন দৌড়ঝাপ। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন তারা। পাড়া-মহল্লায় গনসংযোগ শুরু করেছেন অনেকেই। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে হাট বাজার,চায়ের দোকান,রাস্তার মোড় সহ বিভিন্ন জনবহুল স্থানে চলছে আলাপ-আলোচনা।
বুধবার ঠাকুরগাঁও ৩ আসনের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এমনি বিষয়টি চোখে পড়ে।
সারেজমিনে গিয়ে যানা যায়,সম্প্রতি জাহিদুর রহমান সহ বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে শুন্য ঘোষনা করা হয় ৬টি আসন। আসন গুলিতে আগামী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে উপ-নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষনার পড়েই নড়ে চড়ে বসেছেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের আওয়ামীলীগ,জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কাস পার্টির স্বাম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদিকে এবারে নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য এবারে নতুন মুখ দেখতে চায় স্থানীয়রা।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সেলিনা জাহান লিটা,রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম রবি,পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আলহাজ¦ আখতারুল ইসলাম,পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব,রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সইদুল হক,পীরগঞ্জ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায়।
অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে জাতীয় পার্টি থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি হাফিজউদ্দীন আহমেদ এ উপ-নির্বাচনে অংশ নিবেন বলে জানান। এরজন্য তাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিও রয়েছে বলে জানান দলের স্থানীয় নেতারা। অপর দিকে ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক ইয়াসিন আলী,সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.ইমরান হোসেন চৌধরী ও রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। এছাড়াও জাসদ (ইনু) থেকে এ আসনে উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে চান সিনিয়র সাংবাদিক দীপেন্দ্র নাথ রায়।
রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম রবি বলেন,আমি ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদের দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে রাজনীতি পরিবারে পা রাখি। ২০০১ সাল পর্যন্ত সত্যতার সাথে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে ২০০১-২০০৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য ছিলাম। পরে ২০০৪-২০০৭ পর্যন্ত আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম (আসাফো) এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। ২০০৮-২০১১ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ এর দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ দেই। এর পর ২০১৪ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকি।
তিনি আরো বলেন,আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের জন্য মাঠে কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি এই নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেলে অবশ্যই আমার এলাকার জন্য কাজ করবো।
জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আখতারুল ইসলাম বলেন,এই এলাকার জনগণের সুখে দুখে সব সময় আমি পাশে থেকেছি। ১৮বছর ইউ’পি চেয়ারম্যান ছিলাম এবার উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছি। এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। এবার আমি নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল আমাকে না দিয়ে অন্য যে কাউকেও মনোনয়ন দিয়ে আমি তার পক্ষে কাজ করবো।
পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজওনয়ানুল হক বিপ্লব জানান, তিনি ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সদ্য শুন্য হওয়া ঠাকুরগাঁও- ৩ (পীরগঞ্জ-রাণীশংকৈল) আসনে নৌকা মার্কার মনোনয়ন চান তিনি।
অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায় জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন পেয়ে সেবার তিনি সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গতবার দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। এবারও তিনি আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী।
রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সইদুল হক বলেন, আমি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম এলাকার জনগণের সুখে দুখে সব সময় আমি পাশে আছি । এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছি। এ উপ-নির্বাচনে শতভাগ আশাবাদী আমি নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে । তবে দল আমাকে যদি মনোনয়ন না দেয়। অন্য যাকে মনোনয়ন দিবে আমি তার হয়ে মাঠে কাজ করবো।
জেলা ওয়ার্কাস পাটির্র সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এ্যাড.ইমরান হোসেন চৌধুরী জানান, ওয়ার্কাস পার্টির আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। দল থেকে আমাদের তিন জনের নাম দেয়া হয়েছে। এখন দল যাকে ভালো মনে করেন তিনি থাকবেন। তাকেই আমি সহ আমার কর্মীদের পূর্ণ সমর্থন দিবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তকদির আলী জানান,নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১লা ফেব্রুারি ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।