৫ হাজার কোটি টাকার ভূসম্পত্তি দখলের মূল হোতা সৈয়দপুর পৌরসভাকে বাইপাস করে দূদকের অনুসন্ধান, বিচারহীনতার আশঙ্কা।

মোতালেব হোসেন : সৈয়দপুর রেলওয়ের ২৫.৭৫ একর জমি ১৯৮৪ সালের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ শাখা-১ স্বারক নং-শাখা ৯/এম-৩/৮৪/২২৪(৮০৬) তারিখ ১৯/০৮/১৯৮৪ ইং বাংলাদেশ রেলওয়ের জমিতে বাজার সৈয়দপুর পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করা হয়। চুক্তির ১(ক) শর্তে জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হাট বাজার সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্পোরেশনের নিকট ব্যবস্থাপনার জন্য হস্তান্তরিত করিতে হইবে। জমির মালিকানা বাংলাদেশ রেলওয়ের থাকবে।
খ) শর্ত মোতাবেক টোল বাবদ আয়ের টাকা শতকরা ৫ ভাগ রেলকে দিতে হবে। কোন কারণে দিতে ব্যার্থ হইলে রেল কর্তৃপক্ষ পৌর কর্পোরেশনকে দেওয়া অর্থ হইতে কর্তন করিয়া লইতে পারিবে। অথচ ১৯৮৪ সাল থেকে সৈয়দপুর পৌরসভা রেল কর্তৃপক্ষকে টোল বাবদ কোন টাকাই দেয়নি। উল্টো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২৫.৭৫ একরের বাইরে আরো প্রায় ১০০ একর জমি অবৈধভাবে দখল করে তার টোল আদায় করে যােেচ্ছ। চুক্তির (ঘ) শর্ত মোতাবেক রেলের অপারেশনাল এরিয়ায় অবস্থিত ষ্টেশন ইয়ার্ড, শেড, ওয়ার্কশপ ডিপো, অফিস কমপ্লেক্স, বাসা বাড়ি, ড্রেন উক্ত লীজকৃত ২৫.৭৫ একর জমির ভিতর পড়বে না এবং রেলের জমি হাট বাজার নীতিমালার মধ্যে পড়বে না। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বিল্ডিং এর কোন প্রকার আকার আকৃতি পরিবর্তন করিতে পারিবে না এবং নকশা অনুমোদন দেওয়ার কোন ক্ষমতা থাকিবে না।
সকল শর্ত উপেক্ষা করে সৈয়দপুর পৌরসভা রেলের কাছ থেকে ২৫.৭৫ একর বৈধ লীজ নেওয়ার পর হতে আজ অবধি রেলে জমিতে অবৈধ বহুতল ভবন নির্মানের মহোৎসব চলমান রেখেছে। এব্যাপারে একাধিক সভা সেমিনার মানব বন্ধন করে রেলের জমি উদ্ধারের আয়োজন করলেও অজ্ঞাত কারণে তা বারবার ভেস্তে যায়। বর্তমান মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী রেলের জমি দখলে সরাসরি সাহসী ভূমিকায় নেমেছেন। তিনি পৌরসভার মেয়র সেজে নিজেকে সকল কিছুর উর্দ্ধে মনে করে রেলের ড্রেনের উপর নির্মিত মার্কেটের মামলা ৭৬/০৯ ও অন্য ১/০৬ হেরে গিয়েও মামলায় আদালত কর্তৃক চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষেধাজ্ঞাকৃত জমির উপর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে মার্কেট নির্মানের কাজ শুরু করেন।
রেল কর্তৃপক্ষ ০২/০৩/২০২২ ইং তারিখে স্বারক নং-কিওসি/১-৬৩ স্বারকমূলে পৌরসভাকে ড্রেনের উপর মার্কেট নির্মান কাজ বন্ধ করার নোটিশ দিলেও তা মানছে না। উপরন্ত উক্ত মার্কেট তৈরী করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগীতায় দোকান ও মার্কেট বরাদ্দের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। প্রতি দোকানের মূল্য দেড় লক্ষ টাকা করে ধরা হয়েছে। তিনি এভাবে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। ইজারা বিজ্ঞপ্তি নং-০৩/২০২২-২৩ সৈয়দপুর পৌরসভা।
সকল তথ্য তথ্যভিত্তিক অভিযোগ দূদকসহ সকল মন্ত্রণালয়ে ও দূদকের ১০৬ নাম্বারে ও লিখিত অভিযোগ দায়ের হলেও গত ২০ শে ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে দূদকের সহকারী পরিচালক হোসাইন শরীফ ও উপ-সহকারী পরিচালক সুশান্ত শাহা সৈয়দপুর পৌরসভায় এসে জমি দখলের মূল হোতা ও দখলের সাহায্যকারী পৌরমেয়রের রেলের জমি দখলের দূর্নীতির অভিযোগ অজ্ঞাত কারণে আমলে না নিয়ে দুইজন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এটি নিয়ে সচেতন মহলে চলছে আলোচনার ঝড়।

মোতালেব হোসেন, নীলফামারী অফিস।
তারিখঃ ২১.১২.২০২২ইং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *