কারিগরি বোর্ডের সামসুল আলমের রিপ্লেসমেন্ট জাল-জালিয়াতির ও ফলাফল টেম্পারিং সংক্রান্ত তদন্ত রিপোর্ট চাপা পড়ে আছে !
নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্ট প্রকৌশলী মোঃ সামসুল আলমের বিরুদ্ধে আনীত রিপ্লেসমেন্ট জাল-জালিয়াতির ও ফলাফল টেম্পারিং সংক্রান্ত বিষয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সুপারিশ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান তদন্ত কর্মকর্তারা। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর পার হয়ে গেল, তদন্ত প্রতিবেদনের কোন বাস্তবায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। তাহলে ভূত ছাড়ানো সরিষাতেই ভূত লুকিয়ে আছে। বিভিন্ন পত্রিকা/অনলাইন পত্রিকায় টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত হলেও থামছে না বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্ট প্রকৌশলী মোঃ সামসুল আলমের অনিয়ম-দুর্নীতি।
জানা যায়, সামসুল আলম ২০০৯ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে প্রোগ্রামার হিসেবে যোগদান করেন। ভারপ্রাপ্ত সিস্টেম এনালিস্ট হিসেবে অক্টোবর ২০১৭ সালের দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে মে ২০১৮ সালে সিস্টেম এনালিস্ট এর পদোন্নতি লাভ করেন। সামসুল আলম পদোন্নতি পাওয়ার সাথে সাথে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট ও দালাল চক্র। শুধু তাই নয়, এই কর্মকর্তার রয়েছে বিশাল ক্ষমতাসীন একটা সিন্ডিকেট ও দালাল চক্র। আর এই সিন্ডিকেট দিয়ে টেন্ডারবাজি দালালি সবই কাজ করান এই কর্মকর্তা। সামসুল আলমের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি অনিয়ম শত শত অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, সিস্টেম এনালিস্ট সামসুল আলম সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নাই এই অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। কারণ সামসুল আলমের হাত খুব লম্বা। কথায় কথায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, মামলার হুমকি, চাকরিচ্যুত করা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এই কর্মকর্তার কাছে জিম্মি সিস্টেম এনালিস্ট বিভাগ ও বিভাগের কর্মকর্তা।
বিশ্বস্তসুত্রে জানা যায়, সিস্টেম এনালিষ্ট সামসুল আলমের নামে ঢাকায় নামে বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করা আছে। সামসুল আলমের এলাকাবাসি সূত্রে জানাগেছে, শামসুল আলমের কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। আইনগত ঝামেলা এড়ানোর জন্যে নিজের স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পদ গড়েছেন। তার পরিবার ও আত্বীয় স্বজনের সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স তদন্ত করলেই প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করেন।
দুদকের তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ০৬/০২/২০২০ তারিখে অভিযানকালে বর্ণিত অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব জনাব মোঃ মাহবুবুর রহমানের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। তিনি জানান যে, অভিযোগে বর্ণিত একই বিষয়ে একটি বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে। উক্ত তদন্তে ২০১৯ সালের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার পরীক্ষার্থীর নাম রিপ্লেস করে এবং ফলাফল টেম্পারিং এর মাধ্যমে পরীক্ষায় পাস করানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে মর্মে অভিহিত করা হয়।তার সাথে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এর সুপারিশ করা হয়।
এই বিষয়ে সামসুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়, মিথ্যা বানোয়াট। বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে, তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। এবং প্রতিবেদকে বিভিন্ন রাজনৈতিক লোকের পরিচয় দিতে থাকেন। তিনি প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে, এক পর্যায়ে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে যান।