ঠুনকো নিরাপত্তায় ছোঁ মেরে জঙ্গি ছিনতাই

ডেস্ক রিপোর্ট : এক পুলিশ সদস্যের জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে ২০১৪ সালে তিন সহযোগীকে ছিনিয়ে নিতে সফল হয় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। আর গাজীপুরে ২০১৭ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) ছিনতাই নকশা হয় নিষ্ম্ফলা। এরপর পাঁচ বছরের ফারাক। আবার জঙ্গি ছিনতাইকাণ্ড। এবার ঢাকার বুকে, দিনদুপুরে। জঙ্গি ছিনতাই প্রকাশ্যে। গতকাল রোববার দুপুরে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিজেএম) ফটকে। পুলিশের ওপর হামলা ও পিপার স্প্রে ছুড়ে মৃত্যুদণ্ডের দুই জঙ্গিকে ছোঁ মেরে নিয়ে মোটরসাইকেলে পালায় সহযোগীরা। ছিনতাই হওয়া জঙ্গির একজন আনসার আল ইসলামের মইনুল হাসান শামীম, অন্যজন আবু সিদ্দিক সোহেল।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, জঙ্গিদের পরিকল্পিত এই ছিনতাইকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল ১০ থেকে ১২ সহযোগী। আদালত চত্বরে অনেকটা সিনেমাটিক ঢঙে জঙ্গি ছিনতাই অভিযানে তারা সময় নিয়েছিল ৫ থেকে ৬ মিনিট। জনাকীর্ণ আদালত চত্বর এলাকায় সবার সামনে দুর্ধর্ষ এই অভিযান চালায় জঙ্গিরা। ছিনতাইয়ের ঘটনায় গতকাল রাতে কোতোয়ালি থানায় ২০ জনের নামে মামলা ঠুকেছে পুলিশ। আদালতে তোলা ১২ জঙ্গিকেও (পালানো দু’জনসহ) এ মামলায় আসামি করা হয়। গত রাতে এদের মধ্যে ১০ জনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, পলাতক শীর্ষ জঙ্গি মেজর (বরখাস্ত) জিয়াউল হক জিয়ার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা। অপর দুই জঙ্গি আরাফাত রহমান ও আবদুস সবুরকে আদালত চত্বর থেকে গতকাল ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় তাদের সহযোগীরা। পরে আরাফাত ও সবুর জানায়, তারা জানত রোববার তাদের আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। জিয়ার নির্দেশে এই পরিকল্পনা সাজানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চার জঙ্গিকে এক পুলিশ কনস্টেবল ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যান। বিচার প্রক্রিয়া শেষে ট্রাইব্যুনাল থেকে হাজতখানায় ফেরানোর সময় একইভাবে আনা হয়। সাধারণত দুই আসামিকে একটি হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেওয়া হয়। ২০১৪ সালে প্রিজনভ্যানে জেএমবির হামলার পর দুর্ধর্ষ আসামিদের আদালতে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানার সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটি। গতকাল জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর আদালত এলাকায় নিরাপত্তার ত্রুটির বিষয়টি আবার সামনে এলো। অনেকে বলছেন, পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগ এর দায় কোনোভাবে এড়াতে পারে না। এ ছাড়া জঙ্গি কর্মকাণ্ড ঘিরে গোয়েন্দা নজরদারির দুর্বলতার বিষয়টি স্পষ্ট হলো।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ডিসি (মিডিয়া) ফারুক হোসেন সমকালকে বলেন, নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল বলেই জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। ত্রিশালের ঘটনার পর জঙ্গিদের কীভাবে আদালত চত্বরে আনা-নেওয়া করতে হবে, সে ব্যাপারে বিভিন্ন সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। রোববারের ঘটনায় পুলিশের কার কোথায় দায়িত্বে অবহেলা ছিল, সেটা নিরূপণ করতে তদন্ত কমিটি হয়েছে।

ঘটনা যেভাবে: কোর্ট পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে মোহাম্মদপুর থানার সন্ত্রাসবিরোধী মামলার ১২ আসামিকে প্রিজনভ্যানে করে গতকাল সকাল ১০টায় আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। সেখান থেকে তাদের সকাল সাড়ে ১০টায় সিজেএম আদালত ভবনের আটতলায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ১২ জনের মধ্যে আটজনকে ফের কোর্ট হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।

সরেজমিন ও সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিএমএম আদালতের পাশে হাজতখানা। কারাগার কিংবা থানা থেকে যেসব আসামি নেওয়া হয়, তাদের প্রথমে রাখা হয় ওই হাজতখানায়। এরপর সেখান থেকে হাঁটিয়ে আদালতে তোলা হয় তাদের। গতকাল ১২ জঙ্গির মোহাম্মদপুর থানার সন্ত্রাসবিরোধী মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল সিজেএম আদালত ভবনের আটতলায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কোর্ট হাজতখানা থেকে সিজেএম আদালতে আসামিদের নেওয়া হয় ভিক্টোরিয়া-রায়সাহেব সড়কের পাশের ফুটপাত দিয়ে। এই সড়কে অফিস সময়ে মানুষের ভিড় এতই বেশি থাকে যে হাঁটতে গিয়ে একজন আরেকজনের গায়ে ধাক্কা লাগে। দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের ওই পথ দিয়ে শুধু হাতকড়া পরিয়ে আনা-নেওয়া করা হয় গতকাল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই আসামিকে একসঙ্গে করে একটি হাতকড়া পরানো ছিল। তারা চার আসামিকে পাশাপাশি হাঁটিয়ে দু’জন কনস্টেবল ধরে নিয়ে যেতে দেখেন। সিজেএম প্রাঙ্গণের গেটের কাছে যাওয়ামাত্র তারা পুলিশকে কিলঘুসি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের টেনে গেটের বাইরে রাস্তার ওপর নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা জঙ্গিদের সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

ঘটনার সময় এক আইনজীবীর গাড়িচালক শিবলু সিজেএম আদালত প্রাঙ্গণে প্রাইভেটকার পার্ক করে গাড়ির ভেতরে বসেছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশ আসামিদের নিয়ে কোর্ট চত্বরের গেটের কাছাকাছি যাওয়ামাত্র আসামিরা পুলিশকে কিলঘুসি মেরে টেনে গেটের বাইরে রাস্তায় নেয়। এ সময় সেখানে থাকা চার পুলিশের ওপর পিপার স্প্রে করে। তখন তারা চোখমুখ ডলতে থাকে। যে দু’জনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের ধরেছিলেন কনস্টেবল আজাদ। তাঁকে মারতে মারতে রাস্তার অপর প্রান্তে জাকির ফার্মেসির সামনের দিকে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।

জাকির ফার্মেসির বিক্রয় প্রতিনিধিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হঠাৎ আদালতের গেটে চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। দেখেন, এক কনস্টেবলকে সড়ক বিভাজকের ওপরে ছয়-সাতজন ধরে পেটাচ্ছে। পুলিশ রাস্তার ওপর পড়ে যায়। এ সময় দু’জন আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে তারা রঘুনাথ দাস লেনের দিকে পালিয়ে যায়।

রঘুনাথ দাস লেনের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই রাস্তায় দুই মোটরসাইকেল আগে থেকেই পার্ক করে থাকতে দেখেন তিনি। কয়েকজন লেন দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। একটি মোটরসাইকেলে দুই জঙ্গিকে তুলে নিয়ে যায় তাদের এক সহযোগী। রঘুনাথ দাস লেন দিয়ে ধোলাইখাল টং মার্কেট ও কলাতিয়া বাজারের দিকে বেরিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গিদের ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল, হাতকড়া কাটার যন্ত্র ও বিকল্প চাবি জব্দ করা হয়েছে। ঘটনার পর আদালত চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া সোয়াট টিম, সিটিটিসি, ডিবিসহ বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা যান ঘটনাস্থলে।

ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গির একজন মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং অন্যজন আবু সিদ্দিক সোহেল জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন, লেখক অভিজিৎ রায় ও ব্লগার নীলাদ্রি হত্যাসহ ছয় মামলার আসামি। দুটি মামলায় তার ফাঁসির দণ্ড রয়েছে। এ ছাড়া ছিনিয়ে নেওয়া আরেক জঙ্গি সোহেলও একাধিক মামলার আসামি।

যে দু’জনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের এজলাস থেকে কোর্টহাজতে নিয়ে যাচ্ছিলেন কনস্টেবল নুরে আজাদ। সন্ধ্যায় রাজধানীর চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, আজাদের নাকের ওপর মোটা ব্যান্ডেজ, চোখ লাল, কথা বলতে পারছেন না। কী দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল- জানতে চাইলে হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি জানান, নাক ও মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করার পর চেতনা হারান আজাদ। এখন তিনি চোখে ঝাপসা দেখছেন।

তদন্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আদালত এলাকা থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা পরিকল্পিত। হামলার ধরন ও আলামত দেখে এটা স্পষ্ট, দীর্ঘদিন রেকি করে এ ঘটনা ঘটানো হয়। একসঙ্গে আরও কয়েকজনকে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক ছিল তাদের। তাড়াহুড়ায় হাতকড়া কাটতে না পারায় তাদের ছিনিয়ে নিতে পারেনি। জঙ্গিদের ১০-১২ জনের দলটি ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে আদালতের আশপাশে ছিল। জঙ্গিরা যে বেশভূষায় আদালতে এসেছিল তাতে স্পষ্ট- তারা এই পরিকল্পনা আগে থেকেই জানত।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এটা প্রমাণিত, গোপনে জঙ্গিরা শক্তি সঞ্চয় করেছে। বড় হামলা করার সক্ষমতা তারা রাখে। ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গি ও তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত ঝুঁকির বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, কাশিমপুর কারাগার থেকে একজন উপপরিদর্শকের দায়িত্বে ১০ সদস্যের একটি দল কঠোর নিরাপত্তায় আসামিদের ঢাকায় আদালত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আদালত পুলিশের হেফাজত থেকে আসামিরা পালিয়ে যায়। এখানে গাজীপুরের পুলিশের কোনো দায় নেই।

এদিকে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক সমকালকে বলেন, ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে- এমন দৃষ্টান্ত নেই। যারা ছিনিয়ে নিয়েছে, তারা খুবই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে বলে মনে হয়। পুলিশের যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা সতর্ক ছিলেন না।

সংশ্নিষ্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন: জঙ্গিরা এবার তাদের অপারেশনে ধরন বদলে প্রিজনভ্যানে নয়, হামলা করেছে আদালত আঙিনায়। এতে আদালত এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ প্রশাসন ও কাশিমপুরের কারা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন। মৃত্যুদণ্ডের জঙ্গিদের আদালতে আনার পর কেন আরও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তাদের ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়নি- উঠেছে সেই প্রশ্নও।

বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু সমকালকে বলেন, দুর্ধর্ষ আসামিদের, বিশেষ করে জঙ্গিদের যেভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সে রকম নিরাপত্তা ছিল না। তাদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে পাঠানো উচিত ছিল। আসামিরা যেহেতু মৃত্যুদণ্ডের আসামি, এখানে জেল কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে। তিনি বলেন, জেলকোড অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের আসামিকে কারাগার থেকে বের করার সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে পাঠানো উচিত। আবার যখন এজলাসে ঢুকবে, তখন ডান্ডাবেড়ি খুলে ফেলতে হবে। এটাই নিয়ম। অন্তত ওই এলাকায় সিসিটিভি থাকা উচিত ছিল।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সমকালকে বলেন, দুই ফাঁসির আসামিকে ডান্ডাবেড়ি না পরিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ অসতর্কতার কাজ করেছে। নিশ্চয়ই এটি পুলিশের অবহেলা-গাফিলতি এবং অপরাধ। মনে হচ্ছে, আদালতের নিরাপত্তাও ঢিলেঢালা ছিল।

ফৌজদারি বিশেষজ্ঞ ও দুদকের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল সমকালকে বলেন, আইনে যেটা আছে, সেটি অমান্য করা অপরাধ। আইন মানা আমাদের সবার দায়িত্ব। এটা কোনো গাফিলতি নয়, অপরাধ। ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, জেলখানায় আসামিরা আনন্দমধুর জীবনযাপন করে। জেল কর্তৃপক্ষ তাদের ডান্ডাবেড়ি পরায় না। তারা কেয়ারলেস।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল বলেন, মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ডান্ডাবেড়ি পরানোর কথা। তবে তাদের কেন তা পরানো হলো না, তা বোধগম্য নয়।

সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, আসামিদের শুধু হাতকড়া পরিয়ে আনা হয়েছিল, ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা হয়নি। এটি ঠিক হয়নি। আসামিদের কীভাবে কোর্ট থেকে নামিয়ে আনা হয়েছিল তা জানি না, দেখিনি; সাক্ষ্য নেওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হওয়া উচিত ছিল।

পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন সমকালকে বলেন, জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার পর সারাদেশে সতর্কতা জারি করা হয়। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তবে এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক আইনজীবী জানান, আগে দুর্ধর্ষ আসামি আনা-নেওয়ার সময় ডান্ডাবেড়ি পরানো হতো। তবে পাঁচ বছর আগে উচ্চ আদালত রায় দেন- কোনো আসামিকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজতখানা থেকে আদালতে তোলা যাবে না। শুধু হাতে হাতকড়া পরিয়ে তোলা যাবে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা একটি আপিল বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। তবে ওই রায়ের পর থেকে দুর্ধর্ষ আসামিদেরও ডান্ডাবেড়ি পরাতে চায় না পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *