ইউপি চেয়ারম্যানের তিন দিনের রিমান্ড
জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ভানোর ইউনিয়নের মৎসজীবী লীগের সভাপতি শাকিল আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার ( ১৫ নভেম্বর) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার করা পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের শুনানি শেষে ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রমেশ কুমার ডাগা এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেই সাথে মামলার ১২ নম্বর আসামি তাজুল ইসলাম মানিককে দুই দিন ও ১১ নম্বার আসামি মনির হোসেন কাবাব দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. সৈয়দ আলম।
আইনজীবী জানান, তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রধান আসামী রফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম মানিক ও মনির হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত রফিকুল ইসলামের তিন দিন, মানিক ও মনিরের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। অপর আসামি মমতাজ আলীর সাত দিনের রিমান্ড চাইলে অসুস্থ থাকায় আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সুলতানা আলী জানান, তদন্তের স্বার্থে শাকিল আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ চারজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড চাইলে আদালত রফিকুল ইসলামের তিন ও অপর দুই আসামির দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর মমতাজ আলী অসুস্থ থাকায় তার রিমান্ড মঞ্জুর স্থগিত করেছেন আদালত।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) প্রায় দুই শতাধিক লোকের শোডাউন নিয়ে আদালতে আত্মসমার্পন করে জামিন চাইতে গেলে জামিন না মঞ্জুর করে মামালার প্রধান আসামী রফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী ১৬ নভেম্বর আবারো শুনানীর দিন ধার্য করেন ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ।
চেয়ারম্যানকে কারাগারে নেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে সংবাদকর্মীদের উপর হামলার চেষ্টা করেন তার ভাড়াটে লোকজন।
আদালত চত্বরে হত্যা মামলার প্রধান আসামীর দুইশতাধিক লোকের শোডাউন ও সাংবাদিকদের উপর হামলার চেষ্টায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলার বিশিষ্টজনরা জানান, আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। একজন হত্যা মামলার প্রধান আসামীর সাথে এতো লোকজন কিভাবে শোডাউন দিয়ে আদালত চত্বরে প্রবেশ করলো?
সাংবাদিকদের কাজ হলো তথ্য সংগ্রহ করা। আসামীকে কারাগারে নেওয়ার সময় সাংবাদিকরা যখন ছবি তুলে তখন চেয়ারম্যানের লোকজন সাংবাদিকদের হামলার চেষ্টা করে। আদালতের বারান্দায় সন্ত্রাসীদের এমন ঘটনা সত্যিই আমরা হতাশ। দায়িত্বরত পুলিশ-প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। সাংবাদিকদের সাথে সন্ত্রাসীরা কেন এমন মারমুখী আচরণ করল? অবশ্যই প্রশাসন এর জবাব দিবেন। আর বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তারা।
গত ০৩ সেপ্টেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের হলদিবাড়ী বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা সাঈদ আলম দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সাঈদ আলমের ভাই মৎসজীবীলীগ নেতা শাকিল আহমেদ মারা যায়। পরে বালিয়াডাঙ্গী থানায় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ ২০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যুবলীগ নেতা সাঈদ আলম। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃংখলা বাহিনী।