সার ডিলার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ফকিরহাটের কৃষকরা

মেহেদি হাসান নয়ন, বাগেরহাট : বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটে অধিক মুনাফার আশায় বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। ফলে চলতি আমন ধানে মৌসুমের শুরুতেই ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি, এমওপি, জিপসাম, জিংক সালফেট সারের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের জমিতে সার দিতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সার সংকটের কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি টিএসপি সার ২২ টাকা, এমওপি/পটাশ সার ১৫ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকা, ইউরিয়া ১৬ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু উপজেলার অধিকাংশ সারের ডিলার, সাব ডিলাররা টিএসপি সার বিক্রি করছে ২৫/৩০ টাকা, এমওপি ২০/২২ টাকা, ডিএপি ১৮/২০ টাকা, ইউরিয়া ১৮/২১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। দুই মাস আগেও এক বস্তা ইউরিয়া সার ৮০০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন এর দাম ৯৫০ থেকে ১১০০ টাকা। অনেক জায়গাতেই দেখা মিলছে না পটাশ সার। কয়েক জায়গায় এমওপি/পটাশ সার পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। বহু জায়গায় টিএসপি সারের সংকটও তীব্র।

কৃষকরা বলছেন, সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার পাওয়া যাচ্ছে। কিছু কিছু ডিলার/দোকানে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করছেন না। এমনকি তালিকায় সারের মূল্য লিখছেন না। বিক্রেতারা সরকারি দলের রসিদ দিলেও বাড়তি দরের রসিদ দিচ্ছেন না। প্রতিবাদ করলে সার বিক্রি করবেন না স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতার কাছে বিক্রি করা সার কেড়ে নিয়ে রেখে দিচ্ছেন অধিকাংশ ডিলার। সরকার বিভিন্ন সারের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরও সেই দামে সার বিক্রি করছেন না, ডিলাররা এমন অভিযোগ প্রান্তিক কৃষকদের। যার কারণে সার ডিলার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে কিরহাট উপজেলার হাজার হাজার প্রান্তিক কৃষক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার অনুমোদিত একাধিক সার ডিলারদের গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুত রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলায় অনুমোদিত ডিলাররা জানিয়েছেন, সারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুত রয়েছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা সূত্রে আরও জানা গেছে, জেলায় সার সংকট রয়েছে। যার কারণে সারের সংকট দেখিয়ে কৃষকদের জিম্মি করে ফায়দা লুটছে সংঘবদ্ধ ডিলার সিন্ডিকেট চক্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষিবিদ জানান, কৃষকের সারের চাহিদা পূরণ করতে একটি সুবিধাভোগী চক্র সংশ্লিষ্ট কতিপয় অসাধু কর্তাব্যক্তির যোগসাজশে বাজারে নকল সার সরবরাহ করে কৃষকের সর্বনাশ করতে পারে।

উপজোর কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো.নাছরুল মিল্লাত বলেন, সারের সংকট নেই। কৃষকদের হাহাকার নেই। জানায় বিভিন্ন উপজেলায় সার ডিলার সিন্ডিকেটের কাজে জিম্মি প্রান্তিক কৃষক এই পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভূমিকা কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোনো সার ডিলাররা অনিয়ম করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *