ঠাকুরগাঁওয়ে লোপাট করে উধাও স্বামী, ভুয়া কাবিনে সংসার ১৮মাসে !
জসীম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ভুয়া কাবিননামার মাধ্যমে এক প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ের পর তার টাকা নিয়ে
পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ
ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রুহিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের
করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন মধুপুর গ্রামে।
অভিযুক্ত রেজাউল করমি একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। ভুক্তভোগী
রিনা আক্তার এতিম ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাবা মা মারা যাওয়ার পর একটি ছোটো ঝুপড়ি ঘরে
একাই থাকতেন রিনা। কোনো নিকট আত্মীয় না থাকায় প্রতিবেশীরাই তার খোঁজখবর
রাখতো। কিছুদিন ধরে রেজাউল রিনার বাসায় যাতায়াত করতেন। রেজাউল কেন ওই
বাসায় যাতায়াত করে জানতে চাইলে রিনা বিয়ে করেছেন বলে গ্রামবাসীকে জানান।
সে সময় প্রমাণ স্বরূপ একটি কাবিন নামাও বের করে দেখান রেজাউল। ১৮ মাস
যাবত এভাবেই চলছিলো তাদের সংসার। এতিম ও প্রতিবন্ধী নারীর সংসার গড়ে উঠায়
খুশি হয়েছিলো প্রতিবেশীরাও।
তবে হঠাৎ একদিন রিনার কান্নায় ছুটে যান প্রতিবেশীরা। খোঁজখবর নিয়ে তারা
জানতে পারেন বন্ধুদের সহায়তায় একটি নাটকীয় বিয়ের আয়োজন করেন রেজাউল। সহজ
সরল রিনাকে বিশ্বাস জোগান বিয়ের বিষয়ে। বন্ধুর কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে
বানিয়ে নেন একটি ভুয়া কাবিননামা। সম্পর্কের বিষয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে এই
কাবিননামাটি দেখাতেন রেজাউল। এক পর্যায়ে রিনার কাছে গচ্ছিত থাকা ৩০ হাজার
টাকা ও রিনার নামে একটি এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকার লোন নেন রেজাউল। বাড়ি
মেরামতের নামে সেই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান রেজাউল।
রিনা আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এখন আমার স্বামী আমাকে অস্বীকার করছে।
তাকে আর খুঁজে পাচ্ছিনা। জানতে পেরেছি রেজাউল এর আগেও চারটি বিয়ে সাজিয়ে
একই ভাবে টাকা পয়সা নিয়ে ধোঁকা দিয়েছে। আমি এই লম্পট ও ধোঁকাবাজ স্বামীর
বিচার চাই। তাই থানায় একটি অভিযোগ করেছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাজাহান আলী বলেন, ‘রীনা আক্তার আমার কাছে অভিযোগ
করছে। পরে আমি সেটা যাচাই করে দেখি আসলেই ভুয়া কাবিন দেখিয়ে রীনার সঙ্গে
সংসার করছিল রেজাউল। আর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রেজাউল রীনার সঙ্গে যোগাযোগ
বন্ধ করে দেন। তারপর আমি রীনাকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেই।’
এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রেজাউল করিমের খোঁজ করা হলেও পাওয়া যায়নি। এমনকি
তার পরিবারের সদস্যরাও এই বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে রুহিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা
এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।