আগের রূপে ফিরতে শুরু করছে
বন্দরে সন্ত্রাসী শাহেনশাহ
নিজস্ব সংবাদদাতা : আবারো আগের রূপে ফিরে আসতে শুরু করছেন এক সময়কার দুর্ধর্ষ ও পুলিশের
তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহেনশাহ। সদ্য অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে এখন সেই অর্থ আদায় করে
নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সে। গত বুধবার বিকেলে বন্দরের একটি কোরবানির পশুর
হাটকে কেন্দ্র করে শাহেনশাহ বাহিনীর এমন হিং¯্রতাই ফুটে ওঠে জনসম্মুখে।
জানা যায়,আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা প্রশাসনের
টেন্ডার অনুযায়ী শাহেনশাহ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ২০নং ওয়ার্ডের
সোনাকান্দা ও কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ফরাজীকান্দা এলাকার গরুর হাট দু’টি
শাহেনশাহ ইজারা নেন। ইজারা নেয়ার পর থেকে সে তার হাট দু’টি জমজমাট করার
জন্য তার বাহিনীর লোকজনকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে নদীতে নামিয়ে দেয়। তারা
শীতলক্ষ্যা নদী থেকে প্রতিদিন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা গরুর ট্রলার জোরপূর্বক
নামিয়ে নেয়। বুধবার বিকেলে প্রতিদিনের ন্যায় গরুর ট্রলার নামানোর
চেষ্টাকালে স্থানীয় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে শাহেনশাহ বাহিনী তাদের উপর
অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন
ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকে আঘাত করে। খবর পেয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান ও
নৌ-পুলিশের একাধিক টীম ঘটনাস্থলে ছুটে এসে শাহেনশাহ বাহিনীর ৪জনকে আটক
করে নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে মুচলেকা দিয়ে তাদেরকে
ছাড়িয়ে নেয় শাহেনশাহ। এ ঘটনায় গোটা বন্দর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের
সৃষ্টি করে। সুদূর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে নবীগঞ্জ ঘাটের উদ্দেশ্যে
আসা ভুক্তভোগী গরুর ব্যাপারী আবুল মিয়া জানান,আমরা মদনগঞ্জ কয়লা ঘাটের
সামনে আসার পর শাহেনশাহ বাহিনীর লোকজন জোরপূর্বক আমাদেরকে নামতে বলেন।
আমরা আপত্তি জানালে তারা আমাদেরকে মারধর করেন। এমনকি বড় রকমের ক্ষতি
করারও ভয় দেখান। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান,শাহেনশাহ তার
আগের রূপে ফিরে যেতে শুরু করেছে। কয়লার ময়লা ধুইলেও যায়না। শাহেনশাহ
হচ্ছেন তেমনই। কাউন্সিলর হয়ে সে যেনো অপরাধ করার লাইসেন্স নিয়ে নিয়েছেন।
সূত্র মতে,সোনাকান্দা হাট এলাকার মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে শাহেনশাহ।
পুলিশের খাতায় সে বন্দরের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। যৌথ বাহিনীর শাসনামলে
হিটলিস্টে তার নাম ছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর লৌহ ব্যবসায়ী
জিলানাী হত্যা মামলা এবং শিক্ষানুরাগী বাবুল ঢালীর খামার গরুর ফার্মে
ডাকাতি ও বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও সহ প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে কিছু কিছু মামলা নিস্পত্তি হলেও বেশ কিছু মামলা বিচারাধীন
রয়েছে। এ ব্যপারে শাহেনশাহ ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের
চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক
চন্দ্র সাহা জানান,গরুর হাট নিয়ে কোন প্রকার অভিযোগ পেলে সে যেই হোকনা
কেনো তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কেন না আমাদের আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশ
হাটে আগত গরু নিয়ে কেউ টানাটানি করলে তাকে কোনভাবেই ছাড় দেয়া যেনো না হয়।