ঠাকুরগাঁওয়ে রেলযাত্রীদের দূর্ভোগ
জসীম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশনে রেল যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে নাজেহাল অবস্থা এখন যাত্রীদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আগে রোড রেল স্টেশনের যাত্রী সেড (ছাউনী) ছিল ছোট। ট্রেন এসে থামলে সামনের কয়েকটি ও পিছনের কয়েকটি কোচ (বগি) সেডের বাইরে থাকতো। তখন যাত্রীদের বৃষ্টির সময় ভিজে ভিজে ট্রেনে উঠতে বা নামতে হতো। কিন্তু এখন অবস্থা আরো ভয়াবহ। নতুন করে সেড নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আগের পুরনো সেডও খুলে ফেলে রেখেছে।
স্টেশনে এখন সেড বলতে কিছুই নেই। এই বর্ষায় যাত্রীরা কাকভেজা হয়ে ট্রেনে উঠছেন আর নামছেন। ট্রেনের অপেক্ষায় নিরাপদে দাঁড়ানোর কোন জায়গা নেই। বৃষ্টি হলে অবধারিতভাবে ভিজতে হচ্ছে তাদের। আষাঢ় মাসে এখন প্রায়ই বৃষ্টি হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার ভোর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল। এদিন সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা থেকে দ্রুতযান আন্তঃনগর ট্রেনটি সকাল ৭ টায় স্টেশনের প্লাটফর্মে প্রবেশ করে। আর অসংখ্য নারী পুরুষ ও শিশু ট্রেনযাত্রী বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়ে অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। একই ভাবে ঢাকা থেকে আগত যাত্রীরা ১ নম্বর প্লাটফর্মে বৃষ্টির মধ্যেই নামতে থাকেন। নামার পরেও বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচার জন্য কোথাও আশ্রয় পাননি তাঁরা।
বিশ্রামাগারও ছিল বন্ধ। তাই সব যাত্রী বৃষ্টিতে ভিজেছেন, মালপত্রও ভিজেছে। ঢাকা থেকে আগত যাত্রী ইশতিয়াক ও তাঁর স্ত্রী নূরজাহান জানান, ট্রেন থেকে নেমে এভাবে ভিজতে হবে তা তারা আশা করেন নি। তাদের ৩ বছরের শিশু সন্তান ইয়োহানও বৃষ্টি থেকে রেহাই পাননি। বৃষ্টিতে ভিজেছে তাদের মালপত্র। পরে ইজিবাইকের একজন চালক তাদের মালপত্র বাইকে তুলে নেন।
সবচেয়ে করুণ অবস্থা প্লাটফর্ম নম্বর ২ এ। সেখানে বৃষ্টি ও রোদের ভোগান্তিতো আছেই, আছে সেখানে পৌঁছার ভোগান্তি। একই দিনে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়- পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দোলনচাপা এক্সপ্রেস ২ নম্বর প্লাটফর্মে আসছে। যাত্রীদের ২ নম্বর প্লাটফর্মে যাওয়ার জন্য বলা হয়। সেখানে নেই কোন ওভার ব্রিজ। যাত্রীরা পড়িমরি করে প্লাটফর্ম থেকে কয়েকফুট নীচে অনেক কষ্টে নেমে আবার ওপারে কয়েক ফুট উপরে ২ নম্বর প্লাটফর্মে উঠেন। এসময় অনেকে রেল লাইনে হোঁচট খেয়ে পড়েও যান। অনেককে টেনে হিচড়ে টেনে উঠাতে দেখা যায়। বলাবাহুল্য সবই হয় বৃষ্টির মধ্যে।
ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশননের সহকারী স্টেশন মাস্টার জানান, এব্যাপারে আমাদের করার কিছুই নেই। কবে সেড নির্মাণ শেষ হবে তা বলতে পারে ঠিকাদার