দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আসামিদের সখ্যতা ছিল: শরীফ উদ্দিন

ডেস্ক রিপোর্ট : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম কার্যালয়ের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সঙ্গে প্রভাবশালী আসামিদের সখ্যতা ছিল বলে অভিযোগ করেছেন দুদকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।

সম্প্রতি সমকালের সঙ্গে আলাপকালে এসব অভিযোগ করেন শরীফ। তবে এসময় কোনো কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আসামিদের সখ্যতার কারণে দুদকের অনেক গোপন নথি ফাঁস হয়ে যেত। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জমা দিতে বিলম্ব করা এবং তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য আসামিদের কাছে সরবরাহ করার মতো গুরুতর অভিযোগ করছেন চাকরি হারানো এই কর্মকর্তা।

শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘দুদকের গোপন নথি এভাবে ফাঁস হয়ে যেত বলে তিনি চট্টগ্রামে তার ঊর্ধ্বতনদের বিশ্বাস করতেন না। এ জন্য মামলার নথিপত্র বুঝিয়ে দিতে কখনও কখনও বিলম্ব হয়েছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে জব্দকৃত আলামতও রাখতে হয়েছে নিজ হেফাজতে।’

ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তার সঙ্গে প্রভাবশালী আসামিদের সখ্যতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার মামলার অনেক তথ্য আসামিদের আগেভাগে জানিয়ে দিতেন তারা। কোন আসামির বিরুদ্ধে কী মন্তব্য করেছি, কাকে কেন আসামি করেছি, এমন অনেক গোপন তথ্য আগেভাগে জেনে যেত আসামিরা। আমি হাতেনাতে প্রমাণও পেয়েছি।’

এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠাতে কর্মকর্তারা বিলম্ব করতেন বলেও অভিযোগ করেছেন শরীফ উদ্দিন। তার ভাষ্য, ‘৭৩০ পাতার একটি প্রতিবেদন লিখতে রাতদিন সমান করে ফেলেছিলাম আমি। বদলির আগে এই প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানোর জন্য ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তার কাছে জমা দেই। কিন্তু প্রতিবেদনটি তিন মাস নিজেদের কাছেই রেখে দেন। অন্যদিকে প্রভাবশালী আসামিরা প্রতিবেদনের সব তথ্য আগেভাগে জেনে গিয়ে ঢাকায় তদবির শুরু করে। এ কারণে প্রতিবেদনটি ঢাকায় গেলে তা পুনর্তদন্তের সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি যদি ঢাকায় যেত তবে তদবিরের সময় পেত না প্রভাবশালীরা। মধ্যবর্তী এ সময়ে অনেক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে আমার ধারণা।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘শরীফ উদ্দিনের বিষয়টি নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি কেন্দ্র থেকে দেখভাল করা হচ্ছে।’

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপপরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, ‘শরীফ উদ্দিন আমার সহকর্মী ছিলেন। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো ছিল। এর চেয়ে বেশি কিছু এখন আর বলতে পারব না।’

আসামিদের কাছে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *