মঙ্গলবার খুলছে হাইস্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি : দুই ডোজ টিকা নেওয়া শিক্ষার্থীরা যেতে পারবে সরাসরি ক্লাসে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের আরো দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ষষ্ঠ ও সপ্তম সপ্তাহে এক দিন, অষ্টম ও নবম সপ্তাহে দুই দিন, দশম ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের নিজেদের মতো সূচি তৈরি করবে

আগামী ২২ ফেব্র‚য়ারি মঙ্গলবার থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে| তবে যারা এই সময়ের মধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছে, তারাই শুধু সরাসরি ক্লাসে যেতে পারবে| স্কুলগুলোতে আগের সূচি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে ক্লাস চলবে| বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের নিজেদের মতো করে সূচি তৈরি করবে| তবে প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে আরো দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে| করোনার সংক্রমণ কমতে থাকায় কোভিড-সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে|

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাসংক্রান্ত বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি| এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্হিত ছিলেন| শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতে যে অবস্হায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ হয়েছে, সেই জায়গা থেকেই পাঠদান শুরু হবে| আমাদের ক্লাসের সংখ্যা যে রকম ছিল, আমরা এখন শুরু করব সেই জায়গায়| তারপর আমরা চেষ্টা করব সেই সংখ্যাকে পরিস্হিতি সাপেক্ষে বাড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্হায় নিয়ে যাওয়ার| বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজ নিজ ব্যবস্হা নেবে বলে জানান মন্ত্রী|

তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আগ পর্যন্ত ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে দুই দিন এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাস চলছিল| একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতিদিনই ক্লাস হতো| ২২ ফেব্র‚য়ারি থেকে এভাবে চলবে শিক্ষা কার্যক্রম|

আর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব ব্যবস্হাপনায় অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম চলমান রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর| করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে| পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে এবং প্রতিদিন নির্ধারিত চেক লিস্ট অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কতৃ‌র্পক্ষের কাছে তথ্য পাঠানোর নির্দেশনা ছিল|

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে শিক্ষার্থীরা করোনা ভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ নিয়েছে, আপাতত কেবল তারাই ক্লাসে যাবে| যারা দুই ডোজ টিকা নেয়নি, আপাতত তারা বাসায় থেকে অনলাইনে বা টেলিভিশন দেখে ক্লাস করবে| আর যেহেতু ১২ বছরের কম বয়সিরা টিকা পায়নি, সেহেতু ২২ ফেব্র‚য়ারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো হচ্ছে না|

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার ইতিমধ্যে ১২ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে| ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে হয়তো তা আরো কমে সেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নেমে আসবে, যাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও খুলে দেওয়া যায়| ১২ বছরের কম বয়সিদের কীভাবে টিকার আওতায় আনা যায়, সে বিষয়টিও সরকার বিবেচনা করছে|

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৮ জন ইতিমধ্যে কোভিড টিকার দুই ডোজ পেয়েছে| ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই প্রথম ডোজ পেয়েছে| সেই সংখ্যা ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২২২| শিক্ষামন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ২১ ফেব্র‚য়ারির মধ্যে প্রায় সবার দুই ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে যাবে|

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়| দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও ফের ওমিক্রনের দাপট বাড়ায় গত ২২ জানুয়ারি থেকে দুই দফায় ২১ ফেব্র‚য়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *