অমিক্রন ডেলটার চেয়ে প্রাণঘাতী নয়: ধারণা ডব্লিউএইচওর

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক: করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনে সংক্রমিত ব্যক্তির উপসর্গ ‘খুবই মৃদু’ প্রকৃতির এবং এখন পর্যন্ত এটির কারণে আফ্রিকার কোথাও কোভিড–১৯–এ মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। খবর সিটিএএম ডটকমের।

অমিক্রন নিয়ে এমন ধারণায় ক্রমেই বেশি আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও করোনা মহামারিবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। এতে বিশ্বজুড়ে করোনার নতুন এ ধরনটি নিয়ে চলা আতঙ্কের মধ্যে কিছু স্বস্তির ভাবও দেখা যাচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছে আতঙ্কিত না হওয়ার। ডব্লিউএইচও বলেছে, দেশগুলোকে ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপ ও আতঙ্ক ছড়ানোর পরিবর্তে সতর্ক আশাবাদী হওয়া প্রয়োজন। কেননা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যত বেশি খবর সংগৃহীত হচ্ছে, তাতে এই ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে যে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন আগের বিপজ্জনক ডেলটা ধরনের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী নয়।
খবরে বলা হয়, অমিক্রনে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনটিতে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীর প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা ও নাড়ির স্পন্দনের উচ্চ হারের মতো উপসর্গ বিরল। অমিক্রন প্রথম শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। এর পর থেকে দ্রুতই এটির সংক্রমণ অন্তত ২৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে সারা বিশ্বেই দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধরনটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার কথা ঘোষণা করে।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সারা বিশ্বকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিতে বলে সংস্থাটি।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন সারা বিশ্বের ব্যবসা–বাণিজ্য আরেক দফা ধাক্কা খাওয়ার উপক্রম। সংক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সীমান্ত বন্ধ, বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের ওপর নজরদারি, বাড়তি করোনা পরীক্ষাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, জার্মানি, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, ইসরায়েল এসব দেশের কয়েকটি। একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অমিক্রনের ভয়াবহতা সম্পর্কে দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি বলেছেন, ‘দেশগুলোর এই প্রতিক্রিয়া চিকিৎসাগত দৃষ্টিকোণ থেকে যথাযথ মনে হলেও তা যুক্তিযুক্ত নয়।’ যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের প্রতিক্রিয়াকে ‘শুধুই হইচই’ বা অতিরিক্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খবরে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় অমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েক শ রোগী বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, ক্লান্তি ও নাড়ির উচ্চ স্পন্দনের কথা জানিয়েছেন। তবে কার্যত কেউই স্বাদ–গন্ধ হারানোর কথা জানাননি। কোভিডের বেশির ভাগ ধরনের ক্ষেত্রে রোগীদের জন্য এ দুটি ছিল সাধারণ লক্ষণ।

আল–জাজিরা জানায়, অমিক্রন ধরনের সংক্রমণের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউয়ে প্রবেশ করেছে; তবে হাসপাতালগুলোতে এখনো চাপ তৈরি হয়নি বলে জানান দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জো ফাহলা।

শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জো ফাহলা বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার নয়টি প্রদেশের মধ্যে সাতটিতে নতুন এই ধরনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। আশা করা হচ্ছে, এ ধরন খুব বেশি মানুষের প্রাণ নিতে পারবে না। তিনি দেশবাসীকে টিকার দুই ডোজই নেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, এটিই অমিক্রনের বিরুদ্ধে সেরা সুরক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *