প্রাথমিকে বিদ্যালয়ে মূল্যায়ন, মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষা
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক: বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নতুন শ্রেণিতে তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সরকার। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। এর পরিবর্তে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে। করোনা পরিস্থিতিতে বছরের বেশিরভাগ সময় স্কুলে শ্রেণি কার্যক্রম না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক আজিজ উদ্দিন জানান, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের তিন বিষয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হবে। এগুলো হচ্ছে-বাংলা, ইংরেজি ও গণিত। উচ্চবিদ্যালয় সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতোই পরীক্ষার পরিবর্তে মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়া হবে।শিক্ষার্থীদের নতুন শ্রেণিতে তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে গত বছরের মতো এবারও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে নতুন শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আগের রোল নম্বর নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হবে।ওই সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের সচিব হাসিবুল আলম বলেন, ২০২০ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন যেভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবারও সেভাবে মূল্যায়ন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই গত বছরের মতো এবারও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যেতে পারে। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। প্রতিমন্ত্রী ও অন্য সদস্যরা সচিবের এ প্রস্তাবে সম্মতি দেন। ওই সভার সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে আদেশ হিসাবে জারি করা হয়েছে। ডিপিই মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এতে প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান স্বাভাবিক ছিল। এরপর করোনা পরিস্থিতিতে এ ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, কমিউনিটি রেডিও এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান পরিচালনা করা হয়। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত ছিলেন। এ অবস্থায় নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, মূল্যায়ন করার ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব ব্যবস্থা নিতে পারবে। এমন হতে পারে বাড়ির কাজ থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখল সেটা মূল্যায়ন হতে পারে। এ ছাড়া গত ১২ সেপ্টেম্বর ক্লাস শুরুর পর ক্লাসরুমে যে সমস্ত কার্যক্রম হয়েছে তা দিয়ে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।দেশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুলগুলো কাজ শুরু করেছে। রাজধানীর উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম বলেন, আমরা মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের তিন বিষয়ে পরীক্ষা নিচ্ছি। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নপত্র এবং পাশাপাশি স্কুলের নির্ধারিত উত্তরপত্র লোকদের হস্তান্তর করেছি। পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে জমা দেবেন। তবে এই ফলের উপরে রোল নম্বর নির্ধারিত হবে না।