রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিষ্ণু হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক: রাজনৈতিক দলগুলোকে সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার পাশাপাশি সহিষ্ণু ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে ঐক্য প্রয়োজন।বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনার স্মারক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।একই সঙ্গে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সুশীল সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে দলমতের পার্থক্য ভুলে উন্নয়নের যাত্রায় শামিল হওয়ার আহ্বান জানাই। আসুন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা দল মত ও পথের পার্থক্য ভুলে, ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা আজ স্বপ্ন নয়, বাস্তব বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দেশ দ্রুত এগিয়ে চলছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ শেষ করছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে জনগণ মেট্রোরেলে চলাচলের সুযোগ পাবে বলেও আশা করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। তবে বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জাতির পিতার আদর্শের সরকার দায়িত্বে থাকায় তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে দেশ আজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণে দেশে স্বস্তি বিরাজ করছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও উন্নয়নের প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, জাতি হিসাবে আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত অতিক্রম করছি। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ‘পদ্মা সেতু’ বাস্তবায়ন হয়েছে। এ সেতুর বাস্তবায়ন জাতি হিসাবে আমাদের স্বকীয়তা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীকস্বরূপ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছে।
পদ্মা সেতুর নেগোসিয়েশনের পর অন্যান্য মেগা প্রকল্পে নেগোসিয়েশন দক্ষতার সাথে সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বহুলেন টানেলের দ্বিতীয় টানেলের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। সমগ্র দেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ডিসেম্বর ২০২২ সালে বিজয় দিবসের উপহার হিসাবে দেশের জনগণ প্রথম মেট্রো রেলে চলাচল করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও এমডিজির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অনন্য অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি বাংলাদেশ এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড-এ ভূষিত হয়। এ প্রাপ্তি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের এক বিশাল অর্জন। এ সম্মান বাংলাদেশের, এ সম্মান সমগ্র বাঙালি জাতির।