বাগাতিপাড়ায় প্রভাবশালী প্রতিবেশীর অত্যাচারে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের আর্তনাদ, নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সংখ্যালঘু সুশান্তকে রহিঙ্গা স্টাইলে নির্যাতন

নিজেস্ব প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়ার উপজেলার গারিমপুর(দিয়াড়পাড়া) গ্রামের প্রভাবশালী সুমন ও বাব’রু অত্যাচারে অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের আর্তনাথ! দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত হলেও বিচার না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। থানায় জানালেও কোন পদক্ষেপ না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সুশান্ত কুমার রায়। তবে পুলিশ তা অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সূত্র ও প্রতক্ষ্যদর্শী থেকে জানা যায়, উপজেলার গারিমপুর-কৃষ্ণপুর গ্রামের রবীন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে সুশান্ত একজন সংখ্যালঘু হিন্দু সম্পদায়ের লোক। ২০১৫ সালের দিকে তার জমি জবর দখল করে অভিযুক্তরা। সে সময় অসহায় সুশান্ত জজ কোর্ট নাটোর এ মামলা দায়ের করে যার নম্বর-৩০/২০১৫ও ৩৪/২০১৫, বর্তমানে মামলা দু’টির সাক্ষ্য চলমান। কিন্তু, গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে স্থানীয় গালিমপুর মন্দির মোড়ে গালিমপুর (দিয়াড়পাড়া) গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে সুমন আলী (৩৬) ও একই এলাকার নুপুর আলীর ছেলে মামুনুর রশিদ বাবু (৩২) তাদের ব্যবহৃত অবৈধ মোটর সাইকেল যোগে এসে অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাঁশ দিয়ে মারপিট ও জখমের চেষ্টা করে। স্থানীয় লোকজনের বাধায় সে চলে গেলেও কিছুক্ষন পরে এসে আবারও অকথ্য অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী আঘাত করে। এতে সুশান্তের শরীরে বিভন্ন স্থানে রক্ত জমাট,কালসীরা ও ফুলে উঠে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে রক্ষা করে।
সুশান্ত কুমার রায় বলেন, আমাকে তিন দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগ না করিলে আমাকে মেশিন দিয়া গুলি করে হত্যা করবে, বাড়ী ঘর আগুন দিয়া পুড়িয়ে দিবে, মন্দির ভেঙ্গে দিবে। আমাকে বাংলাদেশে থাকতে দিবে না বলে প্রকাশ্য জনসম্মুখে হুমকি দেয় সুমন। তিনি আরও বলেন, সুমন গংদের দ্বারা যেকোন সময়ে তার উপর আবারও প্রাণঘাতি হামলার সম্ভাবনা আছে।
জনসম্মুখে এ ধরনের ঘটনা-ঘটার দায়ে অভিযুক্ত সুমন মুঠো ফোনে জানান,‘আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়, তারা আমাদের জমিতে আছে। সঠিকভাবে সীমানা নির্ধারণের জন্য ভুমি অফিসে আবেদন করেছি।’
আর অপর অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ বাবু বলেন, ‘মিথ্যা ও বানোয়াটি অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে। তাদের সাথে আমাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ। পাঁকা ইউপি চেয়ারম্যানের ইন্ধনে এই গোলোযোগ হচ্ছে। আমাদের এই বিষয়ে স্থানীয় আ’লীগের সভাপতি(এম.পি কমিটির) এবং সংসদ সদস্যসহ অনেকেই জানেন বলেও দাবি তার। ’
এ ব্যাপারে ১ নং পাঁকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, সুশান্তের জমি জবর দখল করে খাচ্ছে সুমন ও বাবু। তাছাড়াও সুমন একজন মাদকসেবী-ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারী স্বর্ণ ডাকাতি সহ বেশ কিছু মামলার আসামী সে। এরা সমাজের বিশৃংখলা সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ঠ করছে ,তাই দ্রæত বিচার আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিও করেন তিনি।
বাগাতিপাড়া উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুকুমার মুখার্জী বলেন,এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের ,আমাদেরও দেশ অথচ কথায় কথায় এমন হুমকী মানা যায়না।অতি দ্রæত অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন তিনি।
অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার বাগাতিপাড়া মডেল থানার এস.আই আমিরুল বলেন, ‘আমি অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ার পর ওসি স্যারের সাথে কথা বলে মামলা করার কথা বলেছি। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *