সৈয়দপুরে নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে রেলভূমিতে বসবাসকারীদের আলোচনা সভা।
মোতালেব হোসেন : সৈয়দপুরে রেলের আইন পরিপন্থি অবৈধ দখলদারেরা রেলের জমিতে অবৈধ বহুতল ভবন, মার্কেট, ব্যাংক, বীমা, আবাসিক ফ্ল্যাট, দোকানপাটসহ অবৈধভাবে ১১৩১ টি স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। এরমধ্যে একতলা ভবন ৮৭টি, ২তলা ভবন ১৬৭টি, ৩ তলা ভবন ৬৫টি, ৪তলা ভবন ২৬টি, ৫তলা ভবন ৫টি, ৬ তলা ভবন ১টি, বাসাবাড়ি ১৫০টি, রাজনৈতিক দলীয় অফিস ৬টি, আবাসিক হোটেল ৩৬টি, অবৈধ দোকান ৫ হাজার, ১৬টি ব্যাংকের শাখা অফিস ও ৪০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ভূমিদস্যুরা যুগের পর যুগ ভাড়া আদায় করে কোটিপতি বনে গেছেন। ১৯৮৪ সালে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয় ২৫.৭৫ একর রেলের জমি পৌর কর্তৃপক্ষকে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করে। চুক্তি প্রথম শর্ত জমির মালিকানা বাংলাদেশ রেলওয়ের থাকবে এবং এটি হাটবাজার নীতিমালার আওতায় পড়বে না। চুক্তির শর্তে পৌরসভা কোন জমিতে বহুতল ভবনের অনুমতি দিতে পারবে না। আকার আকৃতি পরিবর্তন করিতে পারিবে না। কিন্তু সৈয়দপুরে সরকারের নিয়মমাফিক এবং পরিপত্র মোতাবেক কেউই রাষ্ট্রের আইনকে সম্মান দেখায়নি।
পূর্ববর্তি মেয়র এবং বর্তমান মেয়র সবাই সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে এইসব অবৈধ দখলদারদের নানারকম সুৃবিধা দিয়ে বহুতল ভবনসহ নানান প্রকার অবকাঠামো নির্মানে সহযোগীতা করে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৫ হাজার কোটি টাকার ভূসম্পদ বেহাত করেছে। ২৫.৭৫ একর জমির মালিকানা পৌরসভা দাবী করলেও জমির খাজনা রেল কর্তৃপক্ষ দিয়ে থাকে অথচ পৌরসভা মাইকিং করে বলছে জমির মালিক নাকি তারা। পৌরসভা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দ্বিগুন কর আদায় করলেও রেলকে দিচ্ছে না একটি টাকাও। রেলের জমি দখলের এই মহোৎসবে ইতিপূর্বে বাস্তুহারা, অধিকার বিভিন্ন নামে নানারকম সংগঠন দখলদারিত্ব চালাচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে রেলের জমির দখলদারিত্ব রেখে সৈয়দপুরে নাগরিক ঐক্য পরিষদ নামে একটি নতুন সংগঠন অবৈধ দখলদারদের পক্ষে নেমেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১২ই অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখে নাগরিক ঐক্য পরিষদের ব্যনারে তারা একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহব্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খোকন, সদস্য সচিব সোহেল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারন সম্পাদকসহ রেলের জমি অবৈধ দখলে রাখা অনেক ব্যবসায়ী। সভায় তারা বলছেন আমরা জমির প্রকৃত মালিককেই খাজনা দিয়ে থাকতে চাই। পৌরমেয়র যেটি বলছে সেটি তার মৌখিক কথা তার কাছে জমির মালিকানা বিষয়ে কোনপ্রকার কাগজ নাই এবং তিনি আমাদের কোনপ্রকার কাগজ দেখাতেও পারে নাই। আমরা পৌরসভাকে আজ থেকে কোনপ্রকার খাজনা দেবনা। আমরা এই কমিটির মাধ্যমে মাননীয় রেলমন্ত্রীসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে সমস্যার সমাধানের বিষয়ে কথা বলতে চাই।
মোতালেব হোসেন, নীলফামারী অফিস।