হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তারের টেবিলে ঘুমিয়ে আছে একটি কুকুর।
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি : অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান সুমন শেখ (৩৫) নামে এক যুবক। জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখেন ডাক্তার, নার্স বা কর্তব্যরত কোনো ব্যক্তি রুমে নেই। ডাক্তারের টেবিলের ওপর শুয়ে আছে একটি কুকুর। এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন তিনি।
পরবর্তীতে সুমন শেখ ওই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ আইডি থেকে পোস্ট করেন। মূহুর্তেই ছবিটি ভাইরাল হয়। ছবিটিতে দেখা যায়, ডাক্তারের টেবিলের ওপরে উঠে একটি কুকুর ঘুমিয়ে আছে।
ভাইরাল হওয়া ছবিটি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের। রবিবার (৮ আগস্ট) রাত ১১টা সুমন শেখ ছবিটি মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
সুমন শেখ উপজেলার পিঞ্জুরী গ্রামের মৃত মইয়ার আলী শেখের ছেলে। ছবিটি ভাইরাল হলে হাসতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তার-নার্স না থাকা এবং ওই রুমে কুকুর থাকার নিন্দা জানান স্থানীয়রা। একই সঙ্গে দায়িত্ব গাফিলতির কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিচার দাবি করেছেন তারা।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত বৈদ্য এ ঘটনায় ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। সঠিক জবাব না তিকে পারলে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, ওই রাতে (৮ আগস্ট) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রাজিয়া সুলতানা লোপা, ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু ঘটনার সময় জরুরি বিভাগে কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
সুমন শেখ বলেন, ডাক্তারের টেবিলে কুকুর দেখে অনেক ডাকাডাকি পরে ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ এসে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তরকে ডেকে আনেন। এরপর ডাক্তার রাজিয়া সুলতানা লোপা আমার শাশুড়ির চিকিৎসা করেন। আমি দায়িত্বে অবহেলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।
ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস বলেন, আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট পদে চাকরি করি। জনবল কম থাকার কারণে আমাকে জরুরি বিভাগে ডিউটি করতে হয়। ওই রাতে অল্প সময়ের জন্য আমি ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ জরুরি বিভাগের পাশে ১০২ নম্বর রুমে গিয়ে ছিলাম। এর ফাঁকে জরুরি বিভাগের টেবিলের ওপর একটি কুকুর উঠে ঘুমিয়ে পড়ে। আমি এসে কুকুরটি দেখতে পেয়ে তাড়িয়ে দেই।
ডা. রাজিয়া সুলতানা লোপা বলেন, জরুরি বিভাগ দেখার দায়িত্ব ফার্মাসিস্ট ও নৈশ প্রহরীর। আমরা রাতে জরুরি বিভাগের পাশে ডাক্তারদের যে রুম আসে সেখানে থাকি। রোগী আসলে ফার্মাসিস্ট ও নৈশ প্রহরীরা আমাদের ডেকে নেয়। টেবিলের ওপরে কুকুর উঠে ঘুমানোর বিষয়টি আমি দেখেনি।