কালিগঞ্জ থানার এএসআই মনিরের বিচার চেয়ে পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ
হাবিবুল্লাহ বাহার হাবিব: কালিগঞ্জ থানার এএসআই মনিরের বিচার চেয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী । কালিগঞ্জ উপজেলাধীন রতনপুর ইউনিয়ন এর মহেশকুড়র গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শুকর আলীর বাড়িতে অবস্থানরত তার নাতনি খুকুমণি খাতুন ও তার দুই বছর বয়সী শিশু সন্তানসহ ১৯ জুলাই পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এএসআই মনিরের বিরুদ্ধে লিখিত এই অভিযোগ করেন। এসআই মনির কর্তৃক নারীর শ্লীলতাহানি ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ করে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ঐ নারী ।
অভিযোগকারী খুকুমণি জানান,
আমার স্বামী গোপনে প্রায় চারটে বিয়ে করেছে, আমি সন্তানসহ আমার নানার বাড়ির এলাকার মেম্বার কর্তৃক সালিশের ব্যবস্থা করি কিন্তু যৌতুক-লোভী আমার স্বামীর বাড়ির লোকজন এএসআই মনিরকে দিয়ে প্রকৃত ঘটনাটি ভিন্নভাবে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। পুলিশ অন্যায় ভাবে বিচার স্থল থেকে আমার মামাদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল আমিসহ উপস্থিত সকলে কারণ জানতে চাইলে এএসআই মনির হেলাল নামের একজনকে মারধর করে ও তার সাথে থাকা দালালসহ তিনি সকলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমাকে আমার সন্তানসহ নারিকেল গাছে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন যার ফলে আমার সন্তানের পিঠ ছিলে যায় এবং মেম্বরের উপস্থিতিতে আমার মামাদের আবার ছেড়ে দেয় ।
এই পুলিশ তার ক্ষমতার বলে ও অর্থের বিনিময় সাধারণ মানুষকে মানুষ মনে করেন না । সে নারীদের ও শিশুদের গায়ে হাত দিতেও দ্বিধা-বোধ করেন না। আমি পুলিশ সুপারের নিকট এএসআই মনিরের বিচার চেয়েছে অভিযোগ করেছি । এর সঠিক বিচার হলে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে আমি মনে করি।
খুকুমণি মূল ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে,
গত ১৪ জুলাই আমার ছেলে অসুস্থ হলে আমরা তাকে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসা শেষে আমার নানার বাসা মহেষকুড়ে আসি এবং আমার স্বামী জানতে পারে তার ছেলে অসুস্থ। গত ১৪ তারিখ আমার নানার বাড়িতে রাত ১০ টার দিকে আমার স্বামী আসে। আমার স্বামীর পুনরায় বিয়ে করার বিষয় জানতে চাইলে আমার মায়ের সাথে এবং আমার সাথে কথা কাটাকাটি হয় ।
এক পর্যায়ে আমার স্বামী আমাকে মারধর করলে আমিও তার হাত থেকে বাঁচতে তার শরীরেও হাত তুলি এবং তখন আমার মা ও নানি ছুটে এসে ওর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে। বিষয়টি আমার শ্বশুর বাড়ি ও মহেষকুড়ের মেম্বর রফিক আহম্মেদ রফুকে জানানো হলে ১৫ তারিখ সকাল ১১টার সময় আমার নানা বাড়িতে বসে আপোষ মীমাংসা করবে বলে আসস্ত করেন।
কিন্তু ১৫ তারিখ সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে লাগলো এবং আমার স্বামী তার বাড়িতে ফোন করলে তারা দুপুরে আসবে বলে জানায়। আমরা তখন সবার জন্য রান্না বাড়া করতে থাকি। আমার স্বামী, মামা ও এলাকার অনেকে উঠানের চিয়ারে বসে ছিলো সকলের অপেক্ষায় ।
হটাত দুপুর ১টার দিকে কালিগঞ্জ থানার, এএসআই মনির স্যার মটর সাইকেলে এসে স্বামীর নাম ধরে ডেকে নিয়ে তার পরিবারের একটি মোটরসাইকেলে তুলে দেয় এবং আমার ছোট মামা শেখ তাজিম বিষয়টি জানতে চাইলে তাকে চড় মেরে আসামির মতো মোটরসাইকেলে উঠায়ে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় সকলে তাজিমকে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাই । এএসআই মনির ও তার সহকারী মোটরসাইকেল ড্রাইভার অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজসহ কয়েক জনকে মারধর করে । আমার স্বামীকে ঘটনা স্থল থেকে মটর সাইকেল যোগে চলে যেতে নির্দেশ দেন এবং তারা চলে যায় ।
তখন আমি আমার ছেলেকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মনির স্যারের কাছে সকল বিষয় বলতে গেলে তিনি আমাকে শতাধিক মানুষের সামনে গালিগালাজ করে এবং আমার গলা ধাক্কা দেন,তখন আমি আমার ছেলেসহ পুকুরের পাশে নারিকেল গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং আমার ছেলের শরীরের কিছু অংশ ছিলে যায়। তখন মনির স্যার অনেক টা ঘাবড়ে গিয়ে, ভিডিও করতে শুরু করে এবং ওসি সাহেবকে ফোন করে ভুল তথ্য দিতে থাকে।
ততক্ষণে এলাকার মেম্বর রফিক আহম্মেদ রফু এসে হাজির হন এবং ওসি সাহেবের সাথে কথা বলেন। তখন এএসআই মনির আমার ছোট মামাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।