সাতক্ষীরায় পুলিশের আটকের মুখে পড়ে অক্সিজেন নিয়ে বাড়ি ফিরতে না পারায় পিতার মৃত্যু

হাবীবুল্লাহ বাহার সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরায় অসুস্থ বৃদ্ধ পিতার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়ার পথে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়ে পুলিশ ছেলেকে দু’ঘণ্টা আটকে রাখায় অক্সিজেনের অভাবে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ওই বৃদ্ধর নাম মো. রজব আলী মোড়ল (৬৫)। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের বাসিন্দা।
বৃদ্ধের ছেলে ওলিউল ইসলাম জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধ পিতা। জরুরী অক্সিজেন প্রয়োজন হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য আল ফেরদৌস আলফা’র শহরের পলাশপোলের বাড়ি থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে ইটাগাছা হাটের মোড়ে পৌঁছালে তাকে আটক করেন ইটাগাছা ফাঁড়ির এএসআই সুভাষ চন্দ্র। লকডাউনে বাইরে বেরিয়েছে বলে তার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তাকে দুই ঘন্টা সেখানে আটকে রাখা হয়। পরে ইটাগাছা এলাকার জনৈক জিয়াউল ইসলামের মধ্যস্থতায় ২০০ টাকা নিয়ে এএসআই সুভাষ তাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে দেখেন পিতা অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন।
আবেগআপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, যদি সময় মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়িতে যেতে পারতাম তাহলে হয়তো পিতাকে বাঁচাতে পারতাম। তিনি এই অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক পুলিশ সদস্য বলেন, লকডাউনে আমরা জীবন বাঁজি রেখে কাজ করে যাচ্ছি। এই সুভাষের কারণে পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্য হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সুভাষ চন্দ্র বলেন, তার কাছে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দ্রুত গতিতে ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। আমি তাকে থামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলাম। কাগজ দেখাতে না পারায় তার গাড়িটি আটক করে রেখে তাকে অন্য একটি ইজিবাইকে সিলিন্ডার নিয়ে চলে যেতে বলেছিলাম কিন্তু সে মটর সাইকেল না নিয়ে যেতে রাজি হয়নি। বিষয়টি ট্রাফিক ইন্সপেক্টরকে জানালে তিনি মটরসাইকেলটি ছেড়ে দিতে বলেন। এরমধ্যে সামান্য সময় দেরি হয়েছে। পরে শুনলাম তার বাবা মারা গেছেন। এটি দুর্ঘটনা বসত হয়ে গেছে। নিউজটি না অনুরোধ করেন তিনি।
এবিষয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। অভিযুক্ত এএসআই সুভাষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *