ঝিনাইদহ ডাকবাংলা বাজারে আবারও অভিনব কায়দায় চুরি দুই চোর শ্রী ঘরে
সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরাণ’। প্রবাদটির মর্মার্থ অনুযায়ী ডাকবাংলা বাজারে প্রায় চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র ধরা না পড়লেও এবার একসাথে দুই চোর শ্রী ঘরে পাঠিয়েছেন ডাকবাংলা বাজার দোকান মালিক সমিতির সহযোগিতায় ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্প।
সিসি টিভির ফুটেজ দেখে বহু ক্ষেত্রেই তদন্তের বড়সড় সূত্র আসে পুলিশও জনগণের হাতে। অনেক সময় অপরাধী ধরাও পড়ে। কিন্তু চুরি-ডাকাতিতে এসে ধড়িবাজ দুষ্কৃতীরা সিসি টিভি, ক্যামেরাই খুলে মাটিতে বা অন্যথায় রেখে চুরি করে, এমন ঘটনা শোনা যায় না।
ঠিক তেমনি করেই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে মঙ্গলবার রাতে সেল বাজার টেলিকম,মাজিদুল গার্মেন্টস্ও আধুনিক মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনায় এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ধুমড়ো জালের সৃষ্টি হয়েছে। এর পূর্বেও চোর ধরে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমে থানা-হাজতে সোপর্দ করলেও কদিন পরে জামানি বের হয়ে আবার সেই কাজেই লিপ্ত হচ্ছে।
অভিনব কায়দায় সেল বাজার টেলিকম এর টিনের চাল কেটে রডের খাঁচার উপর বসে দোকানের স্লিং লন্ড-ভন্ড করে সিসি টিভি ভেঙ্গে মুছড়ে মাটিতে ফেলে রাওটার,বেটারী,ইয়ার ফোন,কেবল,হেট ফোন,ব্লুটুথ, বক্স ইত্যাদি এবং আধুনিক মিষ্টান্ন ভাণ্ডার হোটেলের পেছন থেকে ঢুকে তার ড্রয়ারে সমিতির প্রায় চৌদ্দ হাজার নগদ টাকা চুরি করে এই চোর চক্র। এদিকে মাজিদুল এর গার্মেন্টস এর টিনের চাল কাটলেও কিছু নিতে পারেনি তারা।
জানা গেছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের বাদপুকুরিয়া উত্তর পাড়া গ্রামের রাহাজ উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর ও গিলেপোল গ্রামের আঃ রহিমের ছেলে রাতুল সেল বাজার টেলিকম ও আধুনিক মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে চুরি করে তারা তাদের গন্তব্য স্থানে যাওয়ার পায়তারা করছিল। এমনতা অবস্থায় প্রতিদিনের ন্যায় বাজারের পাহারাদারগন রাতুলকে আটক করতে না পারলেও হাতে নাতে জাহাঙ্গীর নামে এক চোরকে আটক করে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতির সহযোগিতায় ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্প হেফাজতে হস্তান্তর করেন।
চোর জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ১টা প্লাস,১টা কাইচে, ১টা বক্স সেট,১ টা হেট ফোন, ১টা মানিব্যাগসহ নগত প্রায় ৯ হাজার টাকা ও উদ্ধার করেন। চোর জাহাঙ্গীরের সাথে ৬-৭ জনের একটি গ্রুপ চক্র আছে তাও সে শিকার করে। তাতক্ষনিক ভাবে গিলেপোল গ্রামের আঃ রহিমের ছেলে রাতুলকেও আটক করে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এ এস আই মাখোন বিশ্বাস। পরে তাদের দুজনেরই ঝিনাইদহ সদর থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে সাধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন বলেন, চুরি হওয়া দোকানগুলো দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে এই চুরির কাজ করছে। এই চোর চক্র দিনের বেলায় নকশা করে আর রাত হলে তারা তাদের অভিযানে নামে। এদের বড় একটি সিন্ডিকেট আছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
এবিষয়ে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আঃ রহমান কামাল বলেন, এই বাজারে মাঝে মাঝে চুরির ঘটনা ঘটার করণে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতিসহ ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্প চোর চক্রকে ধরার চেষ্টা করছিল। এমনতা অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনটি দোকানের মধ্যে দুটি দোকান চুরি করে চোর চক্র তাদের গন্তব্য স্থানে যাওয়ার পায়তারা করছিল তখন আমাদের বাজার পাহারাদারগন হাতে নাতে ধরে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করি।
এবিষয়ে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজিব শেখ বলেন,মঙ্গলবার রাতে চুরি হওয়া দোকানে গিয়েছি। আমাদের পাহারাদারেরা জাহাঙ্গীর নামে এক চোরকে আটক করেছে। সেই চোরের শিকা-উক্তিতে রাতুল নামের আরেক চোরকে আটক করে ডাকবাংলা পুলিশ। এতে করে পূর্বেও এধরণের চোর ধরে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমে থানা-হাজতে সোপর্দ করলেও দেখা গেছে কয়েক দিনের মধ্যেই আবার এলাকায় সেই কাজেই দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে চোর চক্র । সুতরাং দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনিকদের কাছে আকুল আবেদন এধরনের দুষ্কৃতকারীদের (চোর) দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি।
এবিষয়ে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন বলেন,সম্প্রতি বাজারে সুমনের সেল বাজার টেলিকম,মাজিদুল গার্মেন্টস্ও আধুনিক মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে চুরির ঘটনায় নাইট গার্ডের মাধ্যমে দুই চোরকে কিছু টাকাসহ আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো তারা যেন পরবর্তীতে একাজ না করে সেদিকে ও আমরা সজাগ থাকবো।