ঝিনাইদহের হলিধানীতে একাধিক চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত চোরের বিচার নেই, অতিষ্ট এলাকাবাসী!
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের হলিধানী ইউনিয়নের কাতলামারি বাজারে একাধিকবার চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত আলোচিত ও প্রভাবশালী চোর মোফাজ্জেল হোসেন (৩৭) এর আইনগত কোনো বিচার হয়না। অভিযুক্ত মোফাজ্জেল হোসেন কাতলামারি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। কাতলামারি বাজারে একাধিকবার চুরির ঘটনা ঘটায় ও চোরের বিচার না হওয়ায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে কাতলামারি গ্রামবাসি। “কখন না আমার দোকানের সব মালামাল চুরি হয়ে যায়” একথা ভেবে কাতলামারি বাজারের দোকান মালিকরা দিনের পর দিন কাটাচ্ছে ভয়াবহ আতঙ্কে। বারবার চুরির ঘটনায় গ্রাম ও বাজারজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে তোলপাড়। দোকান মালিকরা বলছে আলোচিত চোর মোফাজ্জেল হোসেন প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে দিনের পর দিন কাতলামারি বাজারে চুরি করে আসছে। অথচ তাকে আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া যাচ্ছে না। ইতিপূর্বে কাতলামারি বাজারে চায়ের দোকানী মৃত. আমিরুল ইসলামের স্ত্রী আলিয়া বেগম ভানুর বাড়ির পাশে থাকা বিচালীর গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে স্থানীয়দের নজর ঘুরিয়ে কৌশলে ভানুর বাড়ি থেকে টেলিভিশন চুরি করে। সেসময় ভানু বাজারের কাতলামারী ক্যাম্পে মোফাজ্জেল হোসেনকে আসামি করে অভিযোগ করেন। তৎকালীন ক্যাম্প আইসি রবিউল ইসলামের মাধ্যমে নতুন টিভি কিনে ভানুকে ফেরৎ দিয়ে সমঝোতা করেন। এছাড়াও কাতলামারি বাজারের একাধিক দোকান থেকে সিগারেট ও টাকা চুরি করে ধরা পড়ার পর মোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে বাজারে একাধিক শালীস হয়েছে। এসব চুরির অভিযোগে মোফাজ্জেল হোসেনকে জরিমানাও করা হয়েছিল। ইতিপূর্বের একাধিক চুরির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তুহিনের দোকানে এক লাখ টাকাও মোফাজ্জেল চুরি করেছে বলে আমি একশ ভাগ বিশ্বাস করি বলে জানায় এলাকার সাবেক মেম্বর খলীলুর রহমান লাল। ভুক্তভোগী তুহিন হোসেন ও বর্তমান মেম্বর শরিফুল ইসলাম এসংবাদের সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, কাতলামারি বাজারের একাধিক দোকান থেকে সিগারেট ও টাকা চুরি করে ধরা পড়ার পর মোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে বাজারে একাধিক শালীস বিচার ও জরিমানা করা হয়েছে। এবারও বাজারের দোকান মালিকরা মোফাজ্জেলকে সন্দেহ করছে শুনেছি, আমিও তাকে সন্দেহ করছি। তবে তুহিনের দোকান থেকে যদি মোফাজ্জেল একলাখ টাকা চুরি করে তাহলে আমি সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে মোফাজ্জেল চোরের বিচার ও তার শাস্তি দাবী করছি। সরেজমিনে গিয়ে ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত ৭ই মে শুক্রবার দুপুরে কাতলামারি গ্রামের মৃত. ইয়াকুব আলী মন্ডলের ছেলে তুহিন হোসেন (৩৫) এর কাতলামারি বাজারে সার কিটনাশক দোকানের সাটার ভেঙে একলাখ টাকা চুরি হয়। এঘটনার সময় একই এলাকার রাজনগর গ্রামের রাশেদ হোসেন ও বকসিপুর গ্রামের সাজা মিয়া তুহিনের দোকানের সামনে দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কালে উক্ত দোকানের এক সাটার খোলা দেখতে পায়। দোকানের মধ্যে দোকান মালিক তুহিন রয়েছে ভেবে তারা বাড়িতে চলে যায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে বাজার জুড়ে ব্যাবসায়িদের মাঝে আতঙ্ক আর হতাশ ছড়িয়ে পড়ে। চুরির ঘটনায় তুহিন হোসেন ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। তুহিনের অভিযোগ পেয়ে ঝিনাইদহ থানা পুলিশ অভিযুক্ত মোফাজ্জেল হোসেনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। চুরির ঘটনায় গভীর তদন্ত করতে মোফাজ্জেল হোসেনের মোবাইল থানায় আটকে রেখে মোফাজ্জেলকে আপতত ছেড়ে দেই বলে জানায় ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান। মোফাজ্জেল হোসেন ছাড়া পাওয়ার খবরে আবারও কাতলামারি বাজারে দোকান মালিকদের মধ্যে হতাশ আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের একাধিক দোকান মালিক ও ভুক্তভোগী তুহিন আলোচিত ও প্রভাবশালী চোর মোফাজ্জেল হোসেনের যথাপোযুক্ত শাস্তি দাবী করেছেন। তবে একাধিক চুরির এসব ঘটনাকে নিছক ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে সাংবাদিকদের কাছে বয়ান চালিয়ে দেন মোফাজ্জেল হোসেন।