দিনভর ‘তাণ্ডবে’ শেষ হেফাজতের হরতাল
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকে ঘিরে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনায় হেফাজতের ডাকা হরতালে দিনভর তাণ্ডব চলে রাজধানীসহ সারা দেশে। রবিবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকেই হরতালের পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আবার কোথাও কোথাও মিছিল, সড়ক অবরোধ, গাড়িতে আগুন, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনাও ঘটে। আবারও কোথাও ছিল শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন। হরতালে রাজধানীর পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত থাকলেও বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ করেছেন হরতাল সমর্থকরা। লালবাগে হেফাজত কর্মীরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। মোহাম্মদপুরের বসিলায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন হরতাল পালনকারীরা। এ এলাকায় হরতাল বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গ তাদের কিছুটা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এছাড়া দুপুরের দিকে এ এলাকায় বড় মিছিল বের করে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন।হরতাল পালনে দিনভর সংঘাত আর উত্তেজনায় ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, সানারপাড় এলাকায়। সকালেই রাজধানীর প্রবেশ পথে অবস্থান নেন হেফাজতের কর্মীরা। পুলিশ-বিজিবির সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় সংঘর্ষ। গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় হেফাজত কর্মীরা। এ সময় সংগঠনটির তিন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। সারা দিনই এ সড়ক ছিল হেফাজতের নিয়ন্ত্রণে। হেফাজতের ডাকা হরতাল পালনে রাজধানীর বাইরে সবচেয়ে উত্তাপ ছিল ব্রাহ্মণাড়িয়ায়। হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে নগরজুরে। জেলার প্রেসক্লাব ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা ও মৎস্য অফিসের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়। হরতাল পালনকে কেন্দ্র করে জেলাটিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে খাল কেটে অবরোধ করেন বিক্ষুদ্ধ মাদ্রাসা ছাত্ররা সিলেট নগরীতে সকাল থেকেই হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অবস্থান নেন হেফাজতের কর্মীরা। এতে শহরের গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরে সরকার সমর্থকদের সঙ্গে হেফাজত কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এছাড়া সুনামগঞ্জ ফেনী ও রাজশাহীতে হরতাল পালনে সড়ক নিয়ন্ত্রণে নেন হেফাজতের কর্মীরা।এদিকে এ হরতাল পালনে ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামগামী কোনও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এছাড়া গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকেও কোনও বাস ছাড়েনি। ব্রাহ্মণাড়িয়ায় সংঘাতের কারণে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। হরতাল ঘিরে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। এপিসি জলকামান নিয়ে বিভিন্ন সড়কে টহল দেন তারা। এদিকে পুলিশের পাশাপাশি হরতালের বিরুদ্ধে মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগ, যু্বলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।