গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় ব্যবহার করে তরুণের লাখ টাকা প্রতারণা!

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: নাম আশরাফুল ইসলাম দিপু। বয়স মাত্র ২১ বছর। পড়াশোনার করেছেন অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। অল্প বয়স আর পড়াশোনার পরও যেন প্রতারণার এক মহা উৎসবে মেতে উঠেছেন এই তরুণ। হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। কখনো সরকারি বড় কর্মকর্তা, কখনো ব্যবসায়ী, আবার কখনো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র নেতা। প্রতারণার স্বার্থে সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে চলেন তিনি। নাম ঠিক রাখলেও বদলে যাওয়া পরিচয়ে চড়েন দামি গাড়িতে, বসেন পাঁচ তারকা হোটেলে। ভোলার এই তরুণ পরিচয় দিতো জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচালক। আর এই পরিচয় ব্যবহার করে রাজধানীর ভাটারায় বসবাসকারী সুমি আক্তারকে (২৪) স্বপ্ন দেখিয়েছেন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর অফিস সহকারী পদে চাকরির জন্য। সরকারি চাকরির এমন প্রলোভনে পড়ে নিজেদের সামলাতে না পেরে তিন কিস্তিতে লাখ টাকা দিয়েছেন সুমি আক্তার। সঙ্গে চালাতে দিয়েছেন দামি একটি গাড়ি। কিন্তু কথাবার্তার এক পর্যায়ে এই তরুণকে সন্দেহ হয় ভুক্তভোগী সুমি আক্তার ও তার স্বামী মীর সুজলের। খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে, এই তরুণের ফাঁদে পড়েছেন তারা। পরে রাষ্ট্রীয় একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা এই প্রতারকে সন্ধান পায়। গত কয়েকদিন ধরে এটা নিয়ে কাজ করেন তারা। শেষমেশ রাজধানীর ভাটারা থানায় আশরাফুল ইসলাম দিপুর নামে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। মামলাটি আমলে নিয়ে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলার অংশ হিসেবে থানা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। তদন্তের কয়েকদিনের মাথায় রাজধানীর পল্লবীর সেকশন ১১ রোড নম্বর ২ ব্লক-বির একটি বাসা থেকে এই তরুণকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে আটটি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন, দশটি সিম কার্ড, সরকারি গেজেটে প্রিন্ট কপি, আসামির নামে তিনটি ফেক ফেসবুক আইডি উদ্ধার করে।ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা আরো ভয়াবহ তথ্য পেয়েছি। সে দীর্ঘদিন ধরে নানারকম প্রতারণা করে আসছে। প্রতারণার কাজে ব্যবহারের জন্য সে একাধিক ফেসবুক আইডি ব্যবহার করতো। সর্বশেষ সে নিজেকে নোমান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও গুলশান ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সেক্রেটারি পদে নির্বাচিত হয়েছেন বলে একাধিক ভিডিও প্রচার করছেন। যে ভিডিওগুলো দেখিয়ে সে নতুন ফাঁদ পাতার পরিকল্পনা করেছেন।ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দিপুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর লাখ লাখ টাকা প্রতারণার কথা সে স্বীকার করেছে। তার কাছে সরকারি বিভিন্ন চাকুরির ভুয়া গেজেট পেয়েছি আমরা। জানতে চাইলে, সে জানিয়েছে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য এসব গেজেট সে নিজের কাছে রাখে। মানুষের জন্য তদবির করে। আমরা তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছিলাম। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *