দেওয়ানগঞ্জ সদর ইউনিয়নে কর্মসংস্থান কর্মসূচি’র বেহাল অবস্থা
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি: ফিল্ড সুপার ভাইজার, ট্যাগ কর্মকর্তাসহ মাঠ পর্যায়ে ইজিপিপি প্রকল্প বাস্তাবায়ন সংশ্লিষ্টদের তদারকী না থাকায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ সদর ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ইউপি সদস্যদের আত্বীয় স্বজন ও দলীয়, ভিআইপি অনুপস্থিত শ্রমিকদের কারণে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের আদশ্য উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে দেওয়ানগঞ্জে।
জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ১ম পর্যায়ের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫টি প্রকল্পে ৩২২জন উপকারভোগীর জন্য প্রায় ২৬লক্ষ টাকা মজুরী বরাদ্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ সদর ইউনিয়নের (ইজিপিপি) অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি ১ম পর্যায়ে প্রকল্পের সিংহ ভাগ শ্রমিক কাজে আসে নি। প্রকল্পের কাজ শুরুর ৩৫কর্মদিবস চলে গেলেও ৪৯নং তিলকপুর রোডের ছাত্তারের বাড়ি হতে খড়মা পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পের অর্ধেকও কাজ শেষ হয়নি। এই প্রকল্পে প্রতি কর্মদিবসে ৬২জন শ্রমিক কাজ করা কথা থাকলেও সোমবার উপস্থিত পাওয়া গেছে মাত্র ১৯জন শ্রমিক। উপস্থিত শ্রমিকরা হচ্ছে লতি, আহা মিরা, ভিক্কু, সেনাই, জহুরা, গেল্লি, ফরিদার ছেলে হৃদয়, দুলেনা, মালেকা, মাহফুজা, আ:ছাত্তার, মাজেদা, কালাছি, মাহফুজুরের বদলে জয়ফুল, আমেলা, নাজমা ও গফুর। উপস্থিত শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা এই প্রকল্পে ৩৫দিন ধরে কাজ করছে কোন মজুরী পাননি। ফলে তারা কাজে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। শ্রমিক সর্দার ভিক্কুর কাছে শ্রমিক হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি ২০১৯সালের শ্রমিক হাজিরা দেখান। যেখানে ৬২জন শ্রমিকের কোন নামই নেই।
পরিদর্শন বহিতে দেখা যায়, গত ১৬নভেম্বর এই প্রকল্প উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক পরিদর্শন করে ৬২জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ২৪জন উপকার ভোগী শ্রমিক উপস্থিত পেয়েছেন।
অনুপস্থিত শ্রমিকদের ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি সফিয়া খাতুন জানান, ২৮জনের মতো দলীয় শ্রমিক রয়েছে আমার প্রকল্পে যারা কাজে আসেনা; তাই করার কিছ্ইু নেই।
একই অবস্থা ৫০নং তিলকপুর আক্কাস আলীর বাড়ি হতে সিরাজাবাদ পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত প্রকল্পের। এখানে প্রতিকর্মদিবসে ৬৫জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও মঙ্গলবার কাজে উপস্থিত পাওয়া গেছে মাত্র ১৯জন শ্রমিক। এছাড়াও ৫২নং উৎমারচর দুদুর বাড়ির ব্রীজ হতে মৃত মুসলিম সাবেক মেম্বারের বাড়ি ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে ৬৫জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও এখানে উপস্থিত পাওয়া যায় মাত্র ১৮জন শ্রমিক। প্রকল্পের কাজ শেষ হতে দুই/তিন বাকী থাকলেও এই প্রকল্পের কাজে কাজ কিছুই হয়নি। এব্যাপারে প্রকল্প দুইটি’র সভাপতি ছাত্তার আলী ও ইমেন আলীর কাছে বক্তব্য চাইলে তারা জানান, কি বক্তব্য দিব, দলীয় শ্রমিকরা কাজে আসে না।
এব্যাপারে দেওয়ানঞ্জ সদর ইউনিয়নের সচিব ও ইজিপিপি ইউনিয়ন কমিটি’র সদস্য সচিব আনোয়ারুল হক (অতিরিক্তি দায়িত্ব) জানান, তিনি ইজিপিপি কর্মসূচির ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
এব্যাপারে ইজিপিপি ফিল্ড সুপার ভাইজার সুবির কুমার জানান, অনুপস্থিত শ্রমিকদের বিষয়টি দেখবেন এবং বিল কেটে দিবেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, আমিও প্রকল্পগুলি পরিদর্শন করে অনেক শ্রমিক অনুপস্থিত দেখেছি; অনুপস্থিত শ্রমিকদের বিল দেওয়া হবে না।