আত্রাইয়ে শীতের আগমনীতে খেজুর রস সংগ্রহে তৎপর গাছিরা

রুহুল আমিন,আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা: বেশ কিছু দিন থেকেই ভোর রাতে অনুভূত হচ্ছে শীত শীত ভাব। আর এই শীতের আগমন বার্তায় শীতকালীন অন্যান্য দ্রব্যের সাথে খেজুর রস সংগ্রহ করতেও তৎপর হয়ে উঠেছে নওগাঁর আত্রাইয়ের গাছিরা। উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এখন চোখে পড়ার মত। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য আত্রাই উপজেলা এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরন করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীন জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই। এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন। যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক সময় সেই আব্দুলপর/ নন্দনগাছি এলাকা থেকে গাছিরা এসে এলাকার খেজুর গাছ লিজ নিয়ে তারা রস সংগ্রহ করত। এখন গাছ কমে যাওয়ায় তাদের আগমনও অনেক কমে গেছে। এলাকার গাছিরাই বর্তমানে এলাকার গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকে। উপজেলার নবাবেরতাম্বু গ্রামের গাছি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে। আমরা কৃষি কাজের অবসর সময়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। এ রস থেকে নিজ বাড়িতেই আমাদের নারীরা গুড় তৈরির কাজে সহযোগিতা করন। তাই বাড়তি ঝামেলা আমাদের পোহাতে হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *