দর্শনা কেরু চিনি বিভাগে ৭০কোটি ৭৭ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা লোকসান হলেও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রায় ১৪ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন হয়েছে
হাবিবুর রহমান,চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চিনি উৎপাদন বিভাগে ৭০ কোটি ৭৭লক্ষ ৪৪রভঁভা টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা কেরু চিনিকল।এই বিভাগ লোকসান হলেও তা পুষিয়ে দিচ্ছে অন্য বিভাগ গুলো।সরকারকে প্রচুর পরিমান রাজস্ব দিয়েও মুনাফা অর্জন করেছে কেরুজ চিনি কল।বরাবরের মতো গত অর্থ বছরেও এই চিনি কলে মুনাফা অর্জন হয়েছে ১৫৩ কোটি টাকা। সরকারের রাজস্ব খাতায় ৬৫ কোটি জমা দিয়েও মিলের ৩ টি বিভাগের ৭৫ কোটি টাকা লোকসান পুষিয়ে মূল মুনাফা দাড়িয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। কলটি আরো লাভজনক করতে আগ্রহ বাড়াতে নেওয়া হয়েছে নানামুখি পদক্ষেপ।বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য করপোরেশন থেকে প্রতি বছরের আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্র বেধে দেওয়া হয়ে থাকে।২০১৮-১৯ রোপন মরসুমে যেমন লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি তেমনি মাড়াইয়ের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ৯০ মাড়াই দিবসে৭ হাজার ৩৭৫ একর জমির আখ মাড়াই করে ৮০২৫ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের নির্দেশনা দেয়া হলেও লক্ষমাত্রা অর্জন হয়নি।ফলে২০১৯-২০অর্থ বছরে কেরুজ চিনি কারখানায় লোকসান গুনতে হয়েছে৭০কোটি ৭৭ লাখ৪৪হাজার টাকা। চিনিকল সুত্রে জানা গেছে,২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৯হাজার ১শ’৯৫মেট্রিক টন মজুদের সাথে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের উৎপাদিত ৫হাজার ১শ’৪৩মেট্রিক টন যোগ হয়।বর্তমানে চলতি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত মিলটিতে চিনি মজুদ আছে ৪হাজার ৫শত ৪৮ মেট্রিক টন।যান মূল্য ২৭কোটি ২৮লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে চিনি কারখানা লোকসান হয়েছে ৭০কোটি ৭৭লক্ষ ৪৪হাজার টাকা।
চিনিকলের ৯ টি খামার থাকলেও প্রতি বছরেই লোকসান গুনতে হয় ঐ সব খামার থেকে।২০১৮-১৯অর্থ বছরে ৯ টি খামারে লোকসান গুনতে হয়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা।সব মিলিয়ে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কেরুজ এন্ড কোং এর ৫ টি বিভাগের মধ্যে চিনি, সার ও খামারে লোকসান হয়েছে ৭৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ দিকে মুনাফা অর্জিত হয়েছে ডিস্টিলারী ও বায়োফার্টিলাইজার বিভাগ থেকে। ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার প্রুপলিটার দেশী ও বিদেশী মদ উৎপাদন করে। ডিস্টিলারী বিভাগ থেকে মুনাফা অর্জন হয়েছে ১৫৩ কোটি টাকা।বায়োফার্টিলাইজারে ভিনেগার উৎপাদনে মুনাফা অর্জিত হয়েছে ৩২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, হ্যান্ড সেনিটাইজার উৎপাদনে ১ কোটি ২ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন হয়েছে।সর্বমোট মুনাফা অর্জন থেকে ওই অর্থ বছরে সরকারের রাজস্ব খাতে ভ্যাট ও শুল্ক খাতে জমা দিতে হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। অবশিষ্ট মুনাফার ৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ২৯ হাজার টাকার মধ্যে চিনি, খামার ও সার কারখানার লোকসান পুষানো হয়েছে ৭৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।সরকারের রাজস্ব দিয়ে, তিনটি বিভাগের লোকসান পুষিয়েও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মূল মুনাফা অর্জ করেছে ১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। কেরুজ চিনিকলের মহা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কৃষি) গিয়াস উদ্দীন বলেন,এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কেরু এন্ড কোং। সর্বক্ষেত্রে কেরুজ চিনিকলের রয়েছে অবদান।সরকারের এ মূল্যবান সম্পদ গর্বিত করেছে এ জেলা টিকে।কেরু এন্ড কোং এর কোন সময লোকসান গুনতে হয় না।চিনি,সার ও খামারে লোকসান হলেও ডিস্টিলারী ও বায়োফার্টিলাইজার বিভাগ থেকে তা পুষিয়ে ও সরকারের রাজস্ব দেওয়ার পর ও এবার প্রায় ১৪ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন হয়েছে। চিনি কলটি দীর্ঘদিনের জরাজির্ণ হওয়ায় উৎপাদনের চেয়ে খরচ বেশি হয়ে থাকে।ফলে আখ থেকে পুরা রস বের হয় না সে কারনে চিনি উৎপাদন কমে যায়। এছাড়াও আখ চাষের সাথে ভুট্টা চাষ করার কারনে আখের রস কম হয়ে থাকে।মিলটির বি এম আর কাজ চলছে। এবং উন্নত ফলন সম্মত জাতের আখ চাষ করার চেষ্টা চলছে। আশাকরা হচ্ছে আগামিতে আর চিনি খাতে লোকসান গুনতে হবেনা।তারপরে ও এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে এ চিনি কারখানা টিতে লাভজনক করার জন্য কাচামাল আখচাষ বাড়ানো খুবই জরুরী।এই চাষ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। খামারের লোকসানের কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন,খামর গুলোতে অতিরেক্ত লোকবল থাকায় সেখানে বাড়তি ব্যায় হচ্ছিল। সেখান থেকে ৭০/৮০ জন পাহারাদার ছাটায় করা হয়েছে।খামার গুলোতে নিজেদের তত্বাবধানে চাষাবাদ করা হচ্ছে। আগামিতে এখান থেকে আর লোকসান হবেনা। আশা করা হচ্ছে আগামি অর্থবছরে এখান থেকে ও মুনাফা আসবে।