ঘাটাইলে খোলা আকাশের নিচে ১০টি পরিবার

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘিতে খোলা আকাশের নিচে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন ১০টি পরিবার। উচ্ছেদের নামে ঘর-দরজা ভেঙে দেয়া হলে এ দুর্দশায় পড়তে হয় তাদের। উচ্ছেদ অভিযানের ফলে তাদের ঠিকানা এখন খোলা আকাশের নিচে। বাস্তুহারা এ মানুষের বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে সাগরদীঘির বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। প্রতিবেশীদের কোনো সান্ত্বনাই যেন তাদের কান্না থামছে না। রবিবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ভূমি মন্ত্রণালয় পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে সেখানকার অর্ধশত বসতবাড়ি, দোকানপাট ও বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ হওয়া অনেক পরিবার তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে দিনযাপন করছে। সরেজমিন দেখা গেছে, উচ্ছেদে ঘর হারানো অনেক পরিবার আসবাবপত্র নিয়ে সেখানে অবস্থান করছে। খোলা মাঠে ঠান্ডা বাতাসে কষ্ট করছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উচ্ছেদের মাত্র দুই দিন আগে তাদের জানানো হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বাসা খুঁজে না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে হচ্ছে তাদের। চোখের সামনে নিজের ঘর বুলডোজারে গুঁড়িয়ে যেতে দেখেছেন চা দোকানি হাজেরা খাতুন। প্রায় ৬৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা দুই বছর ধরে নিজের চায়ের দোকান করে সংসার চালাতেন। দীর্ঘদিন নিজের হাতে গোছানো সংসার গুঁড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছেন ফ্যাল ফ্যাল চোখে। উচ্ছেদে ঘর এবং দোকান হারানোর পর খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে হাজেরার মত অনেকেরই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে বসবাস করতেন রেনু নামের আরেক নারী। নিজের ঘরটি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই এই নারীর। দরিদ্র এই পরিবারটি এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দীঘির পাড়ে বসবাসকারী লুৎফর মিয়া বলেন, ‘আমি আইন অনুযায়ী আদালত থেকে ১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে উচ্ছের স্থগিতাদেশের রায় পেয়েছি। তবুও উচ্ছেদ থেকে রেহাই পাইনি। ওই দিনই রায়ের কপি বিকালে পাওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান থেকে রক্ষা মেলেনি।’ লুৎফর মিয়া, আলী হোসেন, হাজেরার মতো অনেক পরিবার এভাবে গৃহহীন হয়েছে। ঘরের মালামাল বের করে নিয়ে আসতে পারলেও রাতে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কোথায় যাবেন, কী করবেন তা নিয়ে ভেবে কুল পাচ্ছেন না তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *