হিসাব সহকারী নিশিকান্তের হাতে জিম্মি শাল্লা উপজেলা হাসপাতাল

জেসি বিশ্বাস,শাল্লা (সুনামগঞ্জ ): নিশিকান্তের হাতে বন্ধী শাল্লা উপজেলা হাসপাতাল। ঐ নিশিকান্ত এম,এল,এস,এস, পদ থেকে হিসাব সহকারী পদে প্রমোশন পেয়েই সে নিজকে হাসপাতালের অঘোষিত টিএইচসি ভাবতে শুরু করায় তার দাপটে , হাসপাতালের সবাই থাকে বস মেনেই কাজ করতে হচ্ছে। জেলা হাসপাতালের সিন্ডিকেটের সাথেও তার নাকি খুব লিয়াজু ,শাল্লায় বাড়ি হউয়াতেও তার এত দাপট বলে অনেকেই মনে করে। ঐ নিশিকান্ত তালুকদার, স্বাস্থ্য বিভাগে ২৭ জানুয়ারী ১৯৯৪ তারিখে এমএলএসএস পদে যোগদান করেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায়। চাকুরিতে যোগদানের সময় তার কিছুই ছিল না বলে জানান এলাকাবাসি। ছাতকে সাত বছর চাকুরির পর ২০০১ সালের অক্টোবরে শাল্লায় যোগদান করে নিশিকান্ত।এর পর আর তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। একটানা ১০ বছর কাটান শাল্লা উপজেলা হাসপাতালে। এরই মধ্যে হাসপাতালকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে এসে তার এবং তাহার পরিবারের চেহারা রাস্তা রাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায়। ১০ বছর পর আবার বদলী হন তাহিরপুর উপজেলায়। সে যায়গা থেকে গত ১৬ অক্টোবর ২০১২ তারিখে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রধান সহকারি কাম হিসাব সহকারি পদে যোগদান করেন। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই ১৩ সালের জুলাই মাসে চলে আসেন নিজ উপজেলা শাল্লায়। দু’দফায় তিনি প্রায় ১৭ বছর একই কর্মস্থলে নিজ এলাকায় চাকুরী করেন অত্যন্ত ধাপটের সাথে। নিশিকান্ত তালুকদারের বিরুদ্ধে ২০১৯ শাল্লা হাসপাতারের ১২ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।উক্ত অভিযোগে উল্লেখ করা হয় হাসপাতালের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ, তাদের মাসিক বেতন থেকে অর্থ কেটে নেয়া, টাকার বিনিময়ে ছুটি প্রদান, ভূয়া বিল-ভাউচারে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়া, বদলী জনিত উৎকোচ গ্রহণ করেন তিনি।কিন্তু নিশিকান্তের লম্বা হাত থাকার কারনে তার কোন তদন্ত ও হয়নি। অনুন্ধানে আরো জানা যায়, টাকা না দিলে হাসপাতালের অন্য কর্মচারীদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতার ফাইলসহ অন্যান্য আর্থিক প্রাপ্যতার ফাইল নাড়েন না তিনি। তাছাড়া নিয়োগ বাণিজ্যেও পিছিয়ে নেই তিনি।২০১৮ সালে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোক নিয়োগে তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ অনেকের। তাছাড়া তিনি ৩য় শ্রেণির একজন কর্মচারী হয়ে প্রায় ১৭ বছর ধরে একটি ১ম শ্রেণির সরকারি বাস ভবন দখল করে আসছেন নির্বিঘ্নে। যেখানে অনেক মেডিকেল অফিসাদের থাকতে হচ্ছে হাসপাতালের বাইরে অথবা এক বাসায় গাদাগাদি করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের অনেক কর্মচারী জানান, এবছরও নিশিকান্ত তালুকদার কর্মচারীদের প্রাপ্য শ্রান্তি বিনোদন ভাতার টাকা হতে ১৫শ’ থেকে ২৫শ’ করে টাকা কেটে নিয়েছেন। শাল্লা থেকে সদ্য বদলীকৃত সিনিয়র ষ্টাফ নার্স শেখ মোঃ নাসির উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ভাই আমি বদলী হয়ে চলে এসেছি। কি আর বলবো নিশিদার যন্ত্রনায় আমরা মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছিলাম। মূলত টাকা না দেয়ায় শহিদুল ইসলাম ও শামীমের যোগদানপত্র সে উপরে পাঠায়নি বলেই এ অভিযোগ করেছিলাম। এখন আমি ও শহিদুল বদলী হয়ে চলে এসেছি। তাই কি হয়েছে জানি না। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফেরদৌস আক্তারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, সবকিছু আমি এখনো অবহিত নই। যদি কারো কাছ থেকে নিশিকান্ত শ্রান্তি বিনোদন ভাতা হতে উৎকোচ নিয়ে থাকে লিখিত অভিযোগ দিলে আমি ব্যবস্থা নেবো। নিশিকান্ত তালুকদার দীর্ঘদিন ধরে সরকারী বাসাতে ভাড়া দিয়েই অবস্থান করছেন। এবিষয়ে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ সামসুদ্দীন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমার কাছে এরকম কোন অভিযোগ আসেনি। এরকম অভিযোগ ফেলে শুধু ব্যবস্থা নয় চুড়ান্ত ব্যবস্থা নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *