বিকাশে টাকা আত্মসাৎকারি চক্র গ্রেফতার
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ঢাকা এবং গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি প্রতারক চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের ৫টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিমকার্ড ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। চক্রটির সদস্যরা চার ভাগে বিভক্ত হয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করতো বলে জানিয়েছে ডিএমপির একটি গোয়েন্দা সূত্র। গত শুক্রবার ঢাকা ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাইফুল ইসলাম, লিটন হোসেন, জুবায়ের শেখ, গোলাম কিবরিয়া মন্ডল, ইমরান মোল্লা, শাওন হোসাইন মন্ডল, মিনজারুল ইসলাম মোল্লা, আশরাফ মোল্লা এবং সাগর আহম্মেদ। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রধানত চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতারণা কাজ করে থাকে। প্রথম গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে অবস্থান করে বিভিন্ন বিকাশের দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পূর্বে লেনদেনকৃত বিকাশ খাতার ছবি তুলে নেয় তারা। পরে ওই ছবি হোয়াটসঅ্যাপের দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে স্থান উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেয়। এরপর দ্বিতীয় গ্রুপ তার কাছে পাঠানো বিকাশ খাতা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নম্বরে বিকাশ দোকানদার সেজে কল করে এবং জানতে চায় যে, তাদের কাছে পাঠানো টাকা তারা পেয়েছেন কিনা এবং ক্যাশ আউট করেছেন কিনা। যদি বলে পেয়েছে কিন্তু টাকা তোলেনি বা ক্যাশ আউট করেনি তখন প্রতারকরা তাদের প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার শুরু করে। প্রতারণার ছলে বলতে থাকে যে, আমার দোকান থেকে একই সময়ে কয়েকটি নম্বরে পাঠানো টাকা নিয়ে অভিযোগ আসায় তাদের নম্বর লক করতে গিয়ে আপনার নম্বরও লক হয়ে গেছে। আপনাকে বিকাশ আফিস থেকে ফোন করে আনলক করে দেবে। ওই সূত্রটি আরও জানায়, অল্প সময়ের ব্যবধানে তৃতীয় গ্রুপ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস অফিসার পরিচয় দিয়ে, অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ অফিসের নম্বর ক্লোনিং করে ফোন দেয়। ফোন করে বিভিন্ন কথার ছলে ওটিপি এবং বিকাশ পিনকোড নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট আনলক করার কথা বলে ভিকটিমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং প্রতারক চক্রের বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে বলে। এভাবে হাতিয়ে নেওয়া টাকা মাঠ পর্যায়ে থাকা সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ গ্রুপের কাছে পাঠানো হয়। যারা বিভিন্ন হাত বদল করে ক্যাশ আউট করে, ফলে প্রতারকদের অবস্থান শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।