১৮ অক্টোবর থেকে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি বন্ধের হুশিয়ারি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ‘লাস্ট মেইল ক্যাবলে’র স্থায়ী সমাধান না করা পর্যন্ত কোনো ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ না করাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।সোমবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।যদি আগামী ১৭ অক্টোবরের মধ্যে সমাধান করা না হয়, তবে আগামী ১৮ অক্টোবর রবিবার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারাদেশে বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ডাটা কানেক্টিভিটি এবং ক্যাবল টিভি বন্ধ রাখার হুশিয়ারি দেন নেতারা।তাদের অন্য দাবি গুলো হলো- আইএসপিএপি, কোয়াব, বিটিআরসি, এনটিটিএন এবং সিটি করপোরেশন সমন্বয়ে ‘লাস্ট মেইল ক্যাবল’ স্থাপন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিন তদন্তের ব্যবস্থা করা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবার মূল্য নির্ধারণ করা, গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা স্বল্পমূল্যে দেয়ার লক্ষ্যে এনটিটিএনরে মূল্য সরকারের মাধ্যমে নির্ধারণ করা এবং গ্রাহক পর্যায়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদানে নিশ্চয়তার পক্ষে এনটিটিএন গুলো সার্বিক সক্ষমতা আছে কিনা তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা।সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, যোগাযোগ-প্রযুক্তি ছাড়াও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে ইন্টারনেট কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে টেলিভিশন দর্শকদের দেশ-বিদেশের টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সংবাদ, বিনোদন, শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ করে দিয়েছে ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। এক কথায় বললে, দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রায় সবগুলো খাতে বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে আইএসপিএবি এবং কোয়াব বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।তারা আরও বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত আগস্ট ২০২০ থেকে আইএসপি ও ক্যাবল টিভি অপারেটরদের কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই প্রধান সড়কসহ সকল সড়ক হতে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ করা শুরু করে। এতে গত দুই মাসে আনুমানিক ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে আইএসপিএবি ও কোয়াবকে। সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণে গৃহীত ঢাকা দক্ষিণ সিটির এই সিদ্ধান্তকে আইএসপিএবি ও কোয়াবের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই। তবে সেই সঙ্গে কোনও আগাম নোটিশ না দিয়ে, কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত না করে কোটি কোটি টাকার ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ কোনও যৌক্তিক সমাধান নয় বলে মনে করছি। এছাড়া কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও কেবল টিভি গ্রাহক যেমন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। একইসঙ্গে চলমান অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হবে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। পাশাপাশি এসব এলাকায় করোনায় সেবাদাতা হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ অনলাইন স্বাস্থ্যসেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে এবং হবে। যা প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার পথে অন্তরায়।তারা হুশিয়ারি করে বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশেনের মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই বর্তমান কোভিড মহামারীর এই সময়ে অগণিত ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি অপারেটরের কথা বিবেচনা করে আমাদের দাবিগুলো সমাধান করে ইন্টারনেট এবং ক্যাবল টিভি খাতকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। অন্যথায়, সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইএসপিএবি সভাপতি এম. এ. হাকিম, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, কোয়াব সভাপতি এস. এম. আনোয়ার পারভেজ প্রমুখ।