নির্যাতিত নারীর পরিবারকে নিরাপত্তা ও মানসিক সেবা নিশ্চিতের দাবি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহধূকে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিত নারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা ও তাদেরা মানসিক সেবা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। একই সঙ্গে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও এই ধরনের ঘটনার প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির মহাসচিব মো নূর খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে তার ওপর বর্বর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। একমাস দু’দিন পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ভাইরাল হয়েছে। আসক বর্বরোচিত নারী নির্যাতনের এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে আসক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুততার সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ নির্যাতিত নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা এবং মানসিক সেবা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে। গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়ন এলাকায় নারী নির্যাতনের এ নির্মম ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বাদল এবং তাদের সহযোগী রহিম, সুমনসহ ৫-৬ জন ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানোর ঘটনাটির ভিডিওচিত্র ধারণ করে। উল্লেখিত নারী তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় নির্যাতনের ভিডিওচিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে এবং এ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত দেলোয়ারসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার নারীকেও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। একটি জাতীয় দৈনিককে স্থানীয় একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ জানান, ঘটনার পর ওই গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনা জানাতে তার কাছে গিয়েছিলেন। তবে কারা তাকে নির্যাতন করেছেন, তা তিনি বলেননি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসক গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এই ঘটনাটিসহ সম্প্রতি নারীর প্রতি নির্মম সংহিসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। প্রায়ই এসব ঘটনার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সম্পৃক্ত থাকছেন। আসক মনে করে, উক্ত ঘটনাটি স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানার পরও তা কিভাবে একমাস ধরে পুলিশ প্রশাসনের অজানা থাকে সেটি জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে করে। এটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত যে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি দোষীদের চিহ্নিত করা, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্যাতিত নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোনও প্রচেষ্টা গ্রহণ করেননি। পাশাপাশি আসক মনে করে, সরকার নিজেকে বিভিন্ন সময়ে নারীবান্ধব হিসেবে দাবি করলেও বাস্তবে সমাজ ও রাষ্ট্র নারীর জন্য ক্রমশ চূড়ান্তভাবে অনিরাপদ আর বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে। নারীর প্রতি এমন বিভৎস ঘটনা সভ্য দেশ হিসেবে নিজেদের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। নারী অধিকার রক্ষায় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেসব অর্জন হয়েছে সেগুলো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলে আসক আশঙ্কা করছে। আসক সরকারের কাছে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো সুক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করে জোরালো প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।