ইউপি চেয়ারম্যান টুলুর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের (ইউপি) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম টুলুর বিরুদ্ধে ফের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, রিশিকুল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আনসার আলী বিগত দশ মাস পূর্বে মারা গেলে তার পরিবর্তে তার ছেলে কামরুল হাসান দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ইউপি চেয়ারম্যান কামরুলের কাছে গ্রাম পুলিশের চাকরি দেওয়ার নামে ৯০ হাজার টাকা দাবী করলে কামরুলের মা আক্তারা বেগম এনজিও থেকে কিস্তির মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ, মেয়ের স্বর্নালংকার,গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী বিক্রি করে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে গিয়ে চেয়ারম্যান টুলুর কথানুযায়ী ৯০ হাজার টাকা পরিষদ করলে আবারও মোবাইল ফোনে ২৮ সেপ্টেম্বরে আরও ২ লাখ টাকা দাবী করেন চেয়ারম্যান টুলু। দাবিকৃত মোট ৩ লাখ টাকা মধ্যে জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানাকে ২ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে হবে। আর ২ লাখ টাকা না দিলে চাকরি হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। এই প্রতিবেদকের সামনে এমনটিই বলছিলেন আর কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন সাবেক গ্রাম পুলিশ মৃত আনসার আলীর স্ত্রী আক্তারা বেগম। আক্তারা বেগমের বাড়ি অত্র ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিলাসী গ্রামে। আক্তারা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রায় দেড় বছর অসুস্থ ছিলো, শেষ পর্যন্ত তিনি মারা গেছেন। তিনি অসুস্থকালীন সময় থেকে আমার ছেলে কামরুল তার বাবার পরিবর্তে ডিউটি করে আসছে। টাকার জন্য ম্যাট্রিক পরীক্ষাও দিতে পারেনি। চেয়ারম্যান টুলুর কথানুযায়ী সবকিছু সম্বল বিক্রি করে ছেলের জন্য ৯০ হাজার টাকা দিলাম তারপর আরও ২ লাখ টাকা দাবী করছে। এখন এতো টাকা আমি কোথায় পাবো। আমার পরিবারে এখন ৪ জন সদস্য।মেয়েটারও বিয়ে দিতে পারছি না। গ্রাম পুলিশে ছেলেটার চাকরিটা হলেও আমার কিছুটা দুঃখ দূর হতো। আমি আজ ৯০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান টুলুকে দিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি।ছেলেটার চাকরিটা না হলে ছেলে মেয়েকে নিয়ে এখন পথে বসতে হবে।এদিকে ছেলেটা ২ বছর যাবত ওর বাবার বদলে ডিউটি করে আসছে তবুও আজ পর্যন্ত কোন জায়গা থেকে একটি টাকাও বেতন পায়নি। আমি আমাদের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী,রাজশাহী জেলা প্রশাসক, গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট বিনীত অনুরোধ করি আমার স্বামীর চাকরিটা আমার ছেলেকে দেওয়া সহ চেয়ারম্যান টুলুর নিকট থেকে আমার প্রদত্ত ৯০ হাজার টাকা ফেরতের ব্যাবস্থা এবং তার উপর যথাযথ শাস্তিযোগ্য ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য।আপনারা এমন ব্যাবস্থা করুন যেন আমার ছেলেটা চাকুরী হয় দু’বেলা দুমুঠো ডাল ভাত খেতে বেঁচে থাকতে পারি। এবিষয়ে রিশিকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান,বিষয়টি আমি জানি। তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।আর অভিযোগকারীর ছেলের যদি সেই রকম যোগ্যতা থাকে তবে চাকরির বিষয়টা বিবেচনায় থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *