বন্যার্তদের মাথাপিছু বরাদ্দ ‘মাত্র ৮ টাকা’,

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ক্রমেই ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে বন্যা। ইতোমধ্যেই উত্তরাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দেশের ৩১ শতাংশের বেশি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অর্ধকোটি সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তালিকা দীর্ঘ হলেও দীর্ঘ হয়নি ত্রাণের তালিকা।

সরকারি হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় অর্ধকোটি মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত ত্রাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে বন্যার্তদের প্রতি সরকারের মাথাপিছু বরাদ্দ মাত্র ৮ টাকা। একে যথেষ্ট বলছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তারা দাবি- ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি মানুষের ত্রাণ প্রয়োজন হয় না।

বাংলাদেশে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে- এমন সতর্কতা আগেই দিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রতি দু-একটি অনুষ্ঠানে দেশে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলেও জানান। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হবে, এমনটি মাথায় রেখেই সরকারের প্রস্তুতি ও বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।

ইতোমধ্যেই দেশের নিম্নাঞ্চলের লাখো জনপদ পানিবন্দি। গ্রামের পর গ্রাম, জনপদের পর জনপদ, চারদিকেই শুধু পানি। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নেমে আসা ঢলের পানিতে উত্তরাঞ্চলের পর এখন ডুবে আছে মধ্যাঞ্চলও। বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে কাঁচাঘর থেকে বহুতল ভবন। সব হারিয়ে লাখ লাখ মানুষ মাথা গুঁজেছে বাঁধ কিংবা সড়কের পাশে। বানভাসি মানুষ বলছেন, ত্রাণের দেখা পাচ্ছেন না তারা।

বন্যায় বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি ডুবে যাওয়ায় মানুষ চরম কষ্টে রয়েছে। বাঁধ ও উঁচু রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে তারা। দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণের জন্য চলছে হাহাকার।

অনেকেই বলছে, কোনো কাউন্সিলর, কোনো মন্ত্রী ও এমপি আজ পর্যন্ত তাদের সেখানে যানি। আরেকজন বলেন, ত্রাণ নিতে এসেছিলাম, দিল না, ফিরে যাচ্ছি। জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরাও স্বীকার করলেন বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়।

তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে, তা মাথাপিছু ৮ টাকারও কম। আর চাল পাচ্ছেন পৌনে ৩ কেজির মতো। তারপরও প্রতিমন্ত্রীর দাবি, বরাদ্দ যথেষ্ট।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ত্রাণ সহায়তাটা দেয়া হয় দরিদ্র-অতিদরিদ্র মানুষদের। এটা ১০ শতাংশ। যারা ঘর হারিয়েছে তাদের প্রত্যেককে টিন এবং নগদ টাকা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা আমাদের আছে। এটা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দেব।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে ত্রাণের ধরণ পাল্টানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। সিপিডি-র সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, তালিকা প্রণয়ন পরিকল্পনার ভেতরে আমরা অনিয়ম দেখেছি, বন্যার সময় কিন্তু এটা চিন্তা করতে হবে যে স্থানীয় সরবরাহ ব্যবস্থা কিন্তু অনেকাংশে ভেঙে পড়ে, এসময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলো পণ্য সরবরাহ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *