কোরবানির পশুর হাটে যেতে মানতে হবে যে ১০ বিধি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: কোরবানির পশুর হাটে চাইলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে না। তাতে করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ঠাসাঠাসিতে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারপরও ঈদুল আজহায় কোরবানির হাটে যাবেন অনেকেই। তবে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে নিজস্ব সচেতনতার বিকল্প নেই।
এই করোনা মহামারির সময়ে কোরবানির পশুর হাটে যাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানা আবশ্যক-
* অবশ্যেই মাস্ক পরিধান করতে হবে। মাস্কটি ভালো মানের কিংবা দামি হতে হবে এমনটা জরুরি নয়। কাপড় বা সার্জিক্যাল মাস্ক দুটি করে পরলে ভালো। যারা সঠিক ব্যবহার জানেন, তারা চাইলে উন্নত মানের মাস্ক পরতে পারেন।
* মাস্ক যেমনই হোক, খেয়াল রাখতে হবে মাস্কটি যেন নাকের ওপর থেকে চোয়ালের নিচের অংশ পর্যন্ত ভালোভাবে ঢেকে রাখে। আপনি নিজ দায়িত্বে মাস্ক পরেছেন। কিন্তু কোরবানির পশুর হাটে দেখবেন, অনেকেই মাস্ক পরেনি। তাদের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন।
* এখনও পর্যন্ত গবাদি পশু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হতে দেখা যায়নি। তার মানে এই নয় যে, পশুর শরীরে ভাইরাস লেগে থাকবে না। তাই পশু পরীক্ষার সময় হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার অবশ্যই রাখবেন। বারবার হাত ধোয়ার জন্য প্রয়োজনে বাড়ি থেকে সাবান পানি গুলিয়ে বোতলে করে নিয়ে যেতে পারেন।
* কোরবানির হাটে পিপিই পরে যাওয়ার তেমন দরকার নেই। বরং অতিরিক্ত গরমে তাতে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। পায়ের সুরক্ষায় গামবুট পরতে পারেন।
* সাধারণ পরিবারের ছেলে-বুড়ো মিলে দল বেঁধে কোরবানির পশু কিনতে যাওয়াই প্রচলিত রীতি। কিন্তু এখন এত আনন্দের সময় নয়। সতর্কতা জরুরি। তাই বয়স্ক মানুষের পশুর হাটে না যাওয়াই ভালো। কিংবা যাদের শ্বাসকষ্ট বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে তারা কোরবানির পশুর হাটে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
* হাট থেকে ফিরেই প্রথমে গায়ের পোশাক, জুতা এবং নিজেকে জীবাণুমুক্ত করুন। অনেকেই বাইরে থেকে এসে গায়ে ও পোশাকে ব্লিচিং পাউডার মেশানে পানি ছিটান। ভুলে তা করবেন না। এটি ত্বক ও কাপড় দুটোর জন্যই ক্ষতিকর। সস্ত ও কার্যকর বিকল্প হলো হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। যেকোনও ফার্মেসি বা অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামের দোকানে এই উপাদান পাওয়া যায়। এটি এক মিনিটেই করোনার ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে।
* হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কেনার সময় সতর্ক থাকুন। কিনতে হবে ‘থ্রি পার্সেন্ট’ বা ৩ শতাংশ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। চাইলে এতে আরও পানি মিশিয়ে পাতলা করে নিতে পারেন। তবে ৩ শতাংশের বেশি মাত্রার দ্রবণ ব্যবহার করা যাবে না। এই পদার্থ দিয়ে নিজের শরীর, পোশাক এমননি গবাদি পশুর শরীরও জীবাণুমুক্ত করতে পারেন।
* বাড়িতে এনে কোরবানির পশুটিকে সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হবে। পরে নিজের গায়ের পোশাক পরিষ্কার করে গোসল করতে হবে। সাবান ও শ্যাম্পু দুটোই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকর।
* মনে রাখবেন- আপনার সচেতনতা ও সতর্কতাই আপনাকে করোনার সংক্রমণমুক্ত রাখতে পারে।
* করোনাকালে কোরবানির পশুর হাটে যাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যদি যেতেই চান তবে সেভাবেই প্রস্তুতি নিন। পশুর হাটে যান যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে।