জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেও গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের গানগুলো আজও বাংলার জনপদে ঘুরে ফিরছে। সেই শিল্পীই আজ জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। গত দুইদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রবিবার (৫ জুলাই) বিকেলে তার অবস্থার অবনতি হয়। তিনি বর্তমানে রাজশাহীর মহিষবাথান এলাকায় বোন ডা. শিখার বাড়িতে রয়েছেন।
এদিন বিকেলে ৬৫ বছর বয়সী এন্ড্রু কিশোরের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সংবাদ কর্মীরা তার বাড়ির সামনে ভিড় করে। তার পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি কোন কথা বলতে পারছেন না।
ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পি এন্ড্রু কিশোর। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর ১১ জুন রাতে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন তিনি। পরের দিন তিনি ঢাকা থেকে রাজশাহী চলে আসেন। এর পর থেকে তিনি তার বোন ডা. শিখার বাড়িতে রয়েছেন।
১১ জুন ঢাকায় ফিরে এন্ড্রু কিশোর সাংবাদিকদের বলেন, আমি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি; আগের তুলনায় আমার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে আছেন তিনি; সপ্তাহ খানেকের বেশি মিরপুরে বাসায় কাটানোর পর শনিবার সকালে তিনি রাজশাহী গেছেন। চেকআপের জন্য তিন মাস পর পর তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে যেতে হবে। গত বছরের ৯ সেপ্টেস্বর শরীরের নানা জটিলতা নিয়ে সিঙ্গাপুর চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন তিনি।
শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার শরীরে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু। ছয়টি ধাপে তাকে মোট ২৪টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে।
তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা সহায়তা করেছিলেন। পাশাপাশি ‘গো ফান্ড মি’ নামে এক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করা হয়। সহশিল্পীদের মধ্যেও অনেকে তার পাশে দাঁড়ান।
গানের মানুষ এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসায় তহবিল সংগ্রহ করতে সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমীন, মিতালী মুখার্জিসহ আরো কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে কনসার্টেরও আয়োজন করা হয়। ১৯৭৭ সালে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকে যাত্রা শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর; এরপর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।