চলতি বছরেই ১৭ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: থামছে না ভারত সীমান্তে হত্যা। বার বার প্রতিশ্রুতি সত্বেও সীমান্তে একপেশে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে প্রতিবেশি ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। চলতি বছরে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশিদের নিহত হবার ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছরের এই সাড়ে ৬ মাসে (১৬ জুন পর্যন্ত) ১৭ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এতথ্য জানিয়েছে।
সর্বশেষ ১৫ জুন নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে এক রাখাল বাংলাদেশির নিহত হওয়ার ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ ধরনের অমানবিক ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহবান জানাচ্ছে।
আসকের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৭ জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো। ২০১৯ সালে ৩৭ জন গুলিতে ও ৬ জন নির্যাতনে মারা গেছে।
সংস্থাটি বলছে, বছরের পর বছরে ধরে এমন হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। ভারত সরকারের কাছ থেকে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে বিভিন্ন সময় নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। যা অত্যন্ত হতাশাজনক। বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। এ ধরনের নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বৈরিতা আর অবিশ্বাস তৈরি করছে।
আসক মনে করে এমন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন। আসক আশা করে, বাংলাদেশ সরকার এসব বন্ধে অনতিবিলম্বে ভারত সরকারের সঙ্গে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি ঘটনাতেই নিরস্ত্র বাংলাদেশিরা নিহত হয়েছেন। বিএসএফের গুলিতে যখনই কোনও বাংলাদেশি নিহত হয় তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাকে গরু চোরাচালানকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা দেখা যায়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক মানুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আত্মরক্ষার জন্য বিএসএফ-র দিক থেকে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয় সেটি যৌক্তিক নয়। সীমান্তে প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার সম্পর্কে বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও বিএসএফ সেটিকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিশ্বাসযোগ্য অজুহাত ছাড়া তারা প্রায়ই বলে আত্মরক্ষার্থে তাদের গুলি করতে হয়।