অস্বস্তি-আশঙ্কা নিয়েই বাংলাদেশ পার করলো ১০০তম দিন
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের শনাক্তের ১০০তম দিন পার করলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
১০০ দিন পার হলেও আগের চেয়ে বেশি অস্বস্তি ও আশঙ্কা রয়ে গেছে। এই ১০০ দিনে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ হাজারে, আর মৃত্যু ছাড়িয়েছে এক হাজার ২০০ জনে। প্রায় প্রতিদিনই আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিছুই আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের নিচে নামছে না।
ইউরোপ-আমেরিকায় করোনার নমনীয় ভাব প্রকাশ পেলেও শক্তি দেখাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশেরও ওপর। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিশ্বের শীর্ষ আক্রান্তের ১৮তম স্থানে উঠে গেছে। এছাড়াও এই ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) দেওয়া তথ্য মতে, মে মাসে করোনায় আক্রান্ত মোট শনাক্ত হয় ৩৯ হাজার ৫৩৭ জন। আর জুনের দুই সপ্তাহেই শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৩৬৭ জনে। মে মাসে মারা যান ৪৮২ জন, আর জুনের প্রথম দুই সপ্তাহে মারা গেছেন ৫২১ জন। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মে মাসের শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা জুনের প্রথম দুই সপ্তাহেই অতিক্রম করেছে।
আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ এপ্রিল দেশে করোনা শনাক্ত হয় ৯ জনের। ৫ এপ্রিল এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে। দেখা যায়, আগের দিনের তুলনায় ২৬ শতাংশ হারে শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেদিন থেকে প্রতিদিন ২০ শতাংশের ওপরে করোনা শনাক্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ জন অতিক্রম করে গত ৬ এপ্রিল, এক হাজার ছাড়ায় ১৪ এপ্রিল, ১০ হাজার ছাড়ায় ৩ মে, ২৫ হাজার ছাড়ায় ১৮ মে, ৫০ হাজার ছাড়ায় ১ জুন, ৭৫ হাজার ছাড়ায় ১১ জুন। ৭৫ হাজার অতিক্রমের ঠিক ৪ দিন পর ১৫ জুন ১০০তম দিনে শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ হাজারে।
আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনা শনাক্তের প্রথম সপ্তাহে ৩ জন, দ্বিতীয় সপ্তাহে ২ জন, তৃতীয় সপ্তাহে ২২ জন, চতুর্থ সপ্তাহে ২১ জন, পঞ্চম সপ্তাহে ৭৫ জন, ষষ্ঠ সপ্তাহে ৪৯৮ জন, সপ্তম সপ্তাহে এক হাজার ৮৩৫ জন, অষ্টম সপ্তাহে ৩ হাজার ৪৫৭, নবম সপ্তাহে ৪ হাজার ২৩০, দশম সপ্তাহে ৫ হাজার ৫৪৮, ১১তম সপ্তাহে ৬ হাজার ৫৭৭, ১২তম সপ্তাহে ১১ হাজার ৩৪২, ১৩তম সপ্তাহে ১৩ হাজার ৫৪৩, ১৪তম সপ্তাহে ১৮ হাজার ৬১৬, ১৫তম সপ্তাহে ২১ হাজার ৭৫১ জন শনাক্ত হয়েছে।
আইইডিসিআরের মাসভিত্তিক হিসাব থেকে জানা যায়, মার্চে শনাক্ত ৫১, এপ্রিলে ৭ হাজার ৬১৬, মে’তে ৩৯ হাজার ৫৩৭ এবং জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহসহ এখনও পর্যন্ত শনাক্ত ৯০ হাজার ৬১৯ জন।
মৃত্যুর হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মার্চে ৫ জন ,এপ্রিলে ১৬৩ জন, মে’তে ৪৮২ জন এবং জুনে এখনও পর্যন্ত ৫২১ জন মারা গেছেন।
আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ শতাংশ এবং ৬৫ শতাংশ মৃত্যু ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর দিক দিয়ে পুরুষের সংখ্যা ৭০ শতাংশের ওপরে।