চেনা চেহারায় ফিরছে ঢাকা, কাটছে না ভীতি

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ধীরে ধীরে শিথিল হচ্ছে লকডাউন। খুলছে অফিস-কর্মস্থল। ঘুরছে গণপরিবহনের চাকা। প্রায় দুই-আড়াই মাসের লম্বা বিরতি শেষে আবারও ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। কিন্তু লঞ্চ, বাস ও ট্রেনে ঢাকামুখী যাত্রীদের যে ভিড় ও ঠাসাঠাসি-গাদাগাদি দেখা যাচ্ছে তা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভীতিকর।
তারপরও সংক্রমণ ঝুঁকি, অনিরাপত্তা নিয়ে চেনা চেহারায় ফিরেছে রাজধানী ঢাকা। জীবিকার তাগিদে পুরোদমে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে ঢাকাবাসী। ফুটপাত থেকে অলিগলি ও কাঁচাবাজার সর্বস্তরেই মানুষের ভিড়। এমনকি রাজধানীর বিভিন্ন প্রধান সড়কগুলোতে দেখা যাচ্ছে যানজট।মঙ্গলবার (২ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় সরেজমিনে রীতিমতো মানুষ ও যানবাহনের জটলা চোখে পড়েছে। গতকাল সোমবার থেকে সীমিত আকারে বাস চালু হয়েছে। তবে অনেক বাসেই অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনা মানতে দেখা যাচ্ছে না। বরং কোনও কোনও বাসে বাদুড় ঝুলা হয়েও যাত্রীদের গন্তব্যের দিকে ছুটতে দেখা যাচ্ছে।স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধি করায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ ছুটি কার্যকর না হওয়া, পর্যায়ক্রমে ছুটির শর্ত শিথিল করা, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরত ও ঢাকা থেকে ফেরত যাওয়া, ঈদ উপলক্ষে শপিং মল, বিপণিবিতান খুলে দেয়াসহ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করায় এখন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সাধারণ ছুটি তুলে দেয়ার পর করোনার সংক্রমণ বাংলাদেশে কতটা বিস্তার লাভ করেছে সেটি আগামী ১৪ থেকে ২১ দিন পর টের পাওয়া যাবে।স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মঙ্গলবার জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ৯১১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, ফলে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৪৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৭০৯ জন।লকডাউন তুলে দেয়ায় রাস্তায় যানজট সম্পর্কে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লঞ্চ, বাস কিংবা ট্রেন কোথায় সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হচ্ছে। যত্রতত্রভাবে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই চাকরি বাঁচানোর দায়ে কিংবা জীবনের তাগিদে বাধ্য হয়েই করোনার ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন। তবে এক্ষেত্রে জনগণের মধ্যেও এখনও সচেতনার অভাব রয়েছে বলে মনে করে অনেকেই।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর সংবাদ আসে ১৮ মার্চ। এরপর মার্চ মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু নাগালের মধ্যে থাকলেও এপ্রিলের শুরু থেকেই বিশেষত এপ্রিলের মাঝামাঝির পর থেকে ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে সংক্রমণ।

করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। যা গত ৩০ মে শেষ হয়। ৩১ মে সরকারি ও বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, একসঙ্গে কোনও অফিসের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করতে পারবেন। গতকাল থেকে দেশব্যাপী গণপরিবহন চালু হয়েছে। যদিও এর আগে সাধারণ ছুটির মধ্যেই গত ২৬ এপ্রিল পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *