কক্সবাজারে ৬ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। এদিকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দকে ৭ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে ।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজারের প্রশাসন। প্রস্তুত রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র, মুজিব কিল্লা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল মোটেল, মেডিকেল রেপিড রেসপন্স টিম, সিপিবির স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্টের টিম, শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত ওষুধসহ সবকিছু।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান একই এলাকায় অবস্থান করে শক্তি সঞ্চয় করছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান।
আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যাচ্ছে, ২০ মে এর মধ্যে এটি আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ এবং কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামকে ৬ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জরুরি সাড়াদানের লক্ষ্যে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। ২৫টি মুজিব কিল্লা। সেই সাথে এখন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ থাকায়, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।এর পাশাপাশি কক্সবাজার শহরে থাকা চার শতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজের বেশকিছু হোটেল-মোটেলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, ৫৭৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫ টি মুজিব কিল্লা-ই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৫ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
তিনি বলেন, যেহেতু এখন করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে নিচু এলাকায় বসবাসকারী মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার আর পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান জানান, ৭১টি মেডিকেল টিম, ৮টি রেপিড রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত ওষুধ। রবিবার থেকে ৮ টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের একটি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
সভায় কক্সবাজার জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, কক্সবাজার জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মাহবুব আলম ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম তাদের নিজ নিজ প্রস্তুতির বিষয়ে তুলে ধরে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার কথা জানান।