দলীয় লোক ছাড়া ভাগ্যে জুটছে না ত্রাণ!
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: করোনাভাইরাসের প্রকোপের পর থেকে স্থবির হয়ে পড়েছে খুলনার ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। এর সঙ্গে অসহায় হয়ে পড়েছে দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। গচ্ছিত তহবিল শেষ হতেই পরিবারে শুরু হয়েছে আর্থিক অনটন। ইতিমধ্যে দরিদ্র শ্রেণির মানুষগুলো তিন বেলার পরিবতর্তে দুই বা একবেলা আহার করতে শুরু করেছেন। নিম্ন মধ্যবিত্তরা অন্যের কাছে হাত পাততে না পেরে পড়েছেন উভয় সংকটে। আপদকালীন সংকট সামাল দিতে সরকার ও শাসক দলের ত্রাণ বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও মাঠে নেই অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, যতটুকু দান-ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তার সবই দলীয় ও মুখ দেখে।
করোনার ভয়ে খুলনায় গত ২৬ মার্চ থেকে প্রায় সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। জনমানব শূন্য হয়ে পড়েছে নগরী। রিকশা, ইজিবাইক চলাচলও একেবারে সীমিত। বন্ধ হয়ে গেছে চাসহ অন্য দোকানপাট। খুলনায় একজন মেয়র, ছয়জন সংসদ সদস্য, একজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নয়জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ৩১ জন কাউন্সিলর, ৬৮ জন ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছেন। তারা সবাই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেও হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া তারা কেউ করোনা সংকটের সময় মাঠে নেই। দেশব্যাপী ভাইরাস আতঙ্কের পর থেকে অনেকের হদিসও পাওয়া যাচ্ছে না। এসব নিয়ে সাধরণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভ দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী খুলনা জেলা প্রশাসন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে। পাশাপাশি নৌ-বাহিনী ও র্যাব-৬ কর্মসূচি আকারে খাদ্য বিরতণ করেছে। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিজ ও ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। খুলনা সিটি করপোরেশন তাদের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে। কিন্তু এ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে মুখ চিনে চিনে। যারা ওই জনপ্রতিনিধির কাছের লোক, তারাই নামের তালিকা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। অভিযোগ উঠেছে, দলীয় লোক না হলে তাদের ভাগ্যে সিটি করপোরেশনের ত্রাণ জুটছে না। বিষয়টি নিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামছুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, ‘আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হলো কোনো অসহায় মানুষ না খেয়ে থাকবে না। মুখ চিনে কাউকে ত্রাণ সামগ্রী দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অনেকেই এ ধরনের কাজ করছে বলে আমরা শুনেছি। তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে।’