কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চেয়ে এখন ডাক্তার বেশি

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেস্কে করোনা আতঙ্কে রোগী ভর্তি কমে গেছে। অবস্থাটা এমন ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে বর্তমান ২১ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও রোগী ভর্তি আছে শিশু ওয়ার্ড মিলে মাত্র ১০ জন। অথচ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের জন্য এ উপজেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতালটিতে সারাবছরই কমপক্ষে শতাধিক রোগী ভর্তি থাকতো। প্রায় সপ্তাহ জুড়ে পুরুষ,মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড মিলে হাতেগোনা অল্প কিছু রোগী ভর্তি রয়েছে। আর বাকি বেডগুলো এখন খালি পড়ে আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিশ্বের সাথে দেশের মধ্যকার সতর্কীকরনে হাসপাতালে রোগী কমে গেছে। তবে অনেকে বাড়ি বসে সাধারন রোগ ব্যাধির জন্য মুঠোফোনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন। সরেজমিনে সাড়ে ১২ টার দিকে হাসপাতালটিতে গেলে দেখা যায়, বহিঃবিভাগে অল্প সংখ্যক রোগী ভর্তি আছেন। আর রোগীদের সাথে আসা মানুষ গুলো হাসপাতালের ফটকের বাইরের সড়কের অতি সাবধানতার সাথে পায়চারি করে বেড়াচ্ছেন। আর বহিঃবিভাগে কিছু রোগী ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিয়ে তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। ভর্তি রোগীদের ওয়ার্ডে গেলে দেখা যায় মহিলা ওয়ার্ডে মাত্র ৩ জন ও পুরুষ ওয়ার্ডে আছেন ৭ জন মিলে মোট ১০ জন রোগী তাদের বেডে শুয়ে আছেন। হাসপাতালটি সূত্রে জানাগেছে, ৫০ শয্যার কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেস্কটিতে বর্তমানে ২১ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। রোববার বেলা সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত মোট রোগী ভর্তি আছে মাত্র ১০ জন। গত শনিবার সারাদিনে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল ১৫ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ১৩ জন। গত ২৩ ও ২৪ মার্চ রোগি ভর্তি ছিল মোট ৪০ জন। ২২ মার্চ ভর্তি ছিল ৪৮ জন। ২১ মার্চ ভর্তি ছিল ৫০ জন। গত এক সপ্তাহের রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আতঙ্কে ক্রমেই রোগী ভর্তি কমে আসছে। হাসপাতাল গেটের ওষুধ ব্যবসায়ী আবদুস সবুর জানান, অনেক দিন ধরে হাসপাতাল গেটে ঔষধের ব্যবসা করছেন কিন্তু হাসপাতালে এত কম রোগীর উপস্থিতি পূর্বে কখনও দেখেননি। দু একজন ওষুধ কিনতে আসলেও তারা তড়িঘড়ি করে বাড়ি ফেরার তাড়া দেখাচ্ছেন। মনে হচ্ছে হাসপাতাল এলাকা ছাড়তে পারলেই যেন তারা রক্ষা পান। আবার অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে চলছে অজানা এক আতংক। কালীগঞ্জ হাসপাতালের আর এমও ডাঃ সুলতান আহম্মদ জানান, উপজেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতালে রোগী ভর্তি সব সময় বেশি থাকে। এখনও পর্যন্ত এ উপজেলার কোথাও করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি এবং হাসপাতালটিতেও কোন করোনা আক্রান্ত রোগী আসেনি। কিন্তু সাবধানতার কারণে করোনা সংক্রমনের ভয়ে মানুষ এখন হাসপাতাল এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন। একেবারেই যাদের উপায় নেই তারা শুধু এখন হাসপাতালমুখী হচ্ছেন। বর্তমান শেষ রাতের দিকে ঠান্ডা এবং সারাদিনের প্রচন্ড গরমের খামখেয়ালী আবহাওয়ার কারণে কিছু ঠান্ডা কাঁশির সাধারন রোগীরা আসছেন। তাদেরকে ব্যবস্থাপত্র দেয়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার সাহস দিচ্ছেন। তারপরও বহিঃবিভাগে আসা রোগীরা ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল ছাড়তে ব্যাস্ত হয়ে পড়ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *